শেষ আপডেট: 28th October 2024 13:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শেখ হাসিনার আওয়ামী লিগের পর খালেদা জিয়ার বিএনপির সঙ্গেও জোর বিবাদ বেধেঁছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। হাসিনাকে উৎখাতে জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানে শামিল হয়েছিল বিএনপিও। তাদের চারশো নেতা-কর্মী তখন পুলিশের গুলিতে নিহত হন বলে দলটির দাবি। কিন্তু শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তেই ছাত্রদের সমালোচনার মুখে পড়ে বিএনপি নেতৃত্ব।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ তুলতে শুরু করেন, বিএনপির ব্যর্থতার কারণেই হাসিনা স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করতে পেরেছিল। এখন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনকে সরানো নিয়ে ছাত্রদের দাবি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বিবাদ অনেক দূর গড়িয়ে গিয়েছে। বিএনপির সাফ কথা তারা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের পক্ষে নয়।
রাষ্ট্রপতিকে সরাতে ছাত্ররা এর আগে সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। পরে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেয় এই ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে।
পাশাপাশি ছাত্র নেতৃত্বও বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একটি দল ইউনুসকে গত সপ্তাহেই জানিয়ে আসে তারা রাষ্ট্রপতিকে সরানোর পক্ষপাতি নন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বকেও একই কথা জানিয়েছেন তারা। তাদের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতিকে সরালে দেশে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিতে পারে।
বিএনপির পর তাদের সহযোগী ১৪ দলের জোটের নেতাদের সঙ্গেও কথা হয় ছাত্রদের। জোট নেতারাও বলেছেন তারাও রাষ্ট্রপতিকে সরাতে চান না। দেশে সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন হলে তখন সাহাবুদ্দিনকে সরানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা যেতে পারে। ছাত্ররা এরপর বিএনপি নেতাদেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলেছে স্বৈরতন্ত্রের দোসরদের সঙ্গে হাত মেলাবেন না।
প্রশ্ন হল খালেদা জিয়ার পার্টি কেন হাসিনার পছন্দের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে রেখে দিতে এত আগ্রহী? আসলে বিএনপি মনে করছে, ছাত্রদের দিয়ে সাহাবুদ্দিনকে সরানোর দাবির পিছনে অন্য।কোনও শক্তির হাত আছে। যারা সাংবিধানিক সংকট তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দীর্ঘদিন রেখে দিতে চায়। কিন্তু সরকার ও ছাত্ররা এখনও রাষ্টপতিকে অপসারণের প্রশ্নে সংখ্যালঘু। জামায়াতে ইসলামী ও অন্য কয়েকটি ইসলামিক দল বাদে বাকি পার্টিগুলি বেঁকে বসেছে রাষ্ট্রপতিকে সরানোর প্রশ্নে। বিএনপি মনে করছেজ রাষ্ট্রপতিকে সরানো হলে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বদলে যাবে। খালেদার দলের বক্তব্য, নির্বাচনের পরম তারা জাতীয় সরকার গড়বেন। তখন সব দলের মতামত নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সরানো।যেতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব দ্রুত নির্বাচন করানো। রাষ্ট্রপতিকে সরানো নয়।
কিন্তু ছাত্ররা তা মানতে নারাজ। তারা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে সরাতে আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছে। ফলে আওয়ামী লিগের পর বিএনপি সহ বহু দলের সঙ্গেই ছাত্রদের সংঘাত অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। নয়া রাজনীতির দিকে পা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি।