শেষ আপডেট: 6th February 2025 22:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইউনুস সরকারের আপত্তি কানে তুলল না ভারত সরকার। পূর্ব নির্ধারিত সূচি মতোই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯’টায় দলের আক্রান্ত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা হলেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লিগের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘দায়মুক্তি’-তে যুক্ত হয়ে হাসিনা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে। সেই অনুষ্ঠানেই কান্না জড়ানো গলায় হাসিনা ঢাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি ভাঙার ঘটনায় দেশবাসীর কাছে বিচার প্রার্থনা করেন। বলেন, আমার বাবা দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আমি দেশের জন্য জীবনের সব কিছু ত্যাগ করেছি। প্রিয় দেশবাসী আপনারাই বিচার করুন, কী অপরাধ করেছি আমরা।
বুধবার রাতেই আওয়ামী লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলিগের ফেসবুক পেজে হাজির হয়ে হাসিনা ভাষণ দেন। তীব্র আক্রমণ করেন ইউনুস সরকারকে। বুধবার তাঁর ওই ভাষণ চলাকালেই ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুরের বাড়ি ভাঙচুর শুরু হয়।
মুজিবের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ইউনুস সরকার হাসিনাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। হাসিনা ভাষণে উসকানি দিয়েছে বলে অভিযোগ সরকারের। যদিও ভাষণ শুরুর আগেই বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফের ভারতের কাছে ক্ষোভ জানায় ইউনুস সরকার। বৃহস্পতিবার ঢাকায় অবস্থিত ভারতের হাই কমিশন অফিসে পাঠানো কূটনৈতিক নোটে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বুধবারের ভাষণকে উসকানিমূলক আখ্যা দিয়ে ইউনুস সরকার নয়াদিল্লির উদ্দেশে বলে, আওয়ামী লিগ নেত্রীকে যেন ফের ভাষণ দিতে না দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকালেই ঢাকার পররাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিবৃতিতে এই কথা জানায়। হাসিনা গত বছরের পাঁচ অগাস্ট থেকে দিল্লিতে আছেন।
হাসিনাকে নিয়ে ইউনুস সরকারের আপত্তি কেন কানে তুলল না ভারত সরকার? পররাষ্ট্রমন্ত্রক সরকারিভাবে এই ব্যাপারে কিছু জানায়নি। তবে মন্ত্রকের একাধিক সুত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লিগ নেত্রী একজন রাজনীতিক। তিনি তাঁর দলের সঙ্গে কথা বলছেন। এতে ভারত সরকারের আপত্তি করার কিছু নেই। তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করছেন। দেশ বিরোধী কিছু বলছেন না।
এদিকে, বিকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশে অস্থিরতা উস্কে দেওয়া মিথ্যা এবং মনগড়া মন্তব্য এবং বিবৃতির বিষয়ে ভারত সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার গভীর উদ্বেগ, হতাশার সঙ্গে জানাচ্ছে, এসব মন্তব্য বাংলাদেশে মানুষের অনুভূতিতে আঘাত হানছে। মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে যে, তার এসব কার্যকলাপ বাংলাদেশে বিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করছে এবং দুই দেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টার পক্ষে সহায়ক নয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছে, পারস্পরিক সম্মান এবং বোঝাপড়ার প্রতি মর্যাদা দিয়ে বলা হয়েছে, হাসিনা যখন ভারতে আছেন, তখন তাঁকে মিথ্যা, মনগড়া এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে যেন বিরত রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে যথারীতি ভাষণ দেন হাসিনা। তিনি দেশের চলতি পরিস্থিতির জন্য প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে দায়ী করেন।