শেষ আপডেট: 17th February 2025 23:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার গোটা বাংলাদেশে হরতাল পালনের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লিগ। গতবছর ৫ অগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশের সাবেক শাসকদল আগামীকালই প্রথম গোটা দেশে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করতে চলেছে।
হরতালের কয়েক ঘণ্টা আগে সোমবার রাতে আওয়ামী লিগের সোশ্যাল মিডিয়ার নিয়মিত প্রোগ্রাম 'দায় মুক্তি'-তে যোগ দেন দিল্লিতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, 'আমি জানি আপনারা খুবই দুর্যোগের মধ্যে আছেন। তার মধ্যেও আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে হবে। আমি সবাইকে বলছি, হরতালকে সফল করে তুলুন। আমি সকলকে বলছি মানুষের কাছে যান এবং তাদের পাশে নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন।'
হাসিনা এদিন, গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের আক্রমণে নিহত বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীর স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই তিনি হরতালের প্রসঙ্গ টানেন। প্রসঙ্গত, গত ৩১ জানুয়ারি আওয়ামী লিগ ফেব্রুয়ারি মাস ব্যাপী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। সেই কর্মসূচি শুরু হয় ৫ ফেব্রুয়ারি। সেদিন থেকে দফায় দফায় লিফলেট বিলি, দেওয়াল লিখন এই সব কর্মসূচি চালায়। এরই মাঝে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার 'অপারেশন ডেলিভ হান্ট' নামে গ্রেফতারি অভিযান শুরু করেছে। রবিবার পর্যন্ত সেই অভিযানে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে ও আওয়ামী লিগেরও অভিযোগ, ধৃতদের প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ তাদের দলের সাধারণ নিরীহ কর্মী-সমর্থক। তাঁরা কেউ দেওয়ালে জয় বাংলা লিখেছেন, কেউ জয় হাসিনা লিখেছেন, কেউ জয় বঙ্গবন্ধু লিখেছেন। এই সমস্ত অপরাধে তাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এভাবে আওয়ামী লিগের আন্দোলনকে ভেস্তে দিতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার, অভিযোগ শেখ হাসিনারও।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নেরও অভিযোগ আনেন। সেই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের বলেন, যার পক্ষে যেভাবে সম্ভব এই হরতাল কর্মসূচি সফল করতে হবে। আওয়ামী লিগের একাধিক নেতা জানাচ্ছেন, তাঁরা বিভিন্ন রকম কৌশল নিয়েছেন। যাতে এই হরতাল সম্পূর্ণ হয়। তাঁরা মানুষজনকে অনুরোধ করেছেন, শুধু দোকান হাট-বাজার বন্ধ নয়, কেনাকাটা মঙ্গলবার বয়কট করতে। তাঁদের বক্তব্য ইউনুস সরকার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার কোনওটাই থাকছে না। এই পরিস্থিতিতে সকলকে পাশে নিয়ে আওয়ামী লিগ আন্দোলন করতে চাইছে। সেই কারণেই অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করেছে ইউনুস সরকার।
হাসিনা এদিন বার বার ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন। বলেন, 'এটা কেমন সরকার যারা বিচার-আইন কোনওকিছুই মানছে না। গণ অভ্যুত্থানের সময় পুলিশ কর্মী ও আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীদের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের সরকার যে দায়মুক্তি দিয়েছে অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা হবে না বলেছে, হাসিনা সেই সিদ্ধান্তে তীব্র সমালোচনা করেন।' আরও বলেন, 'আমি একদনি দেশে ফিরবোই। দেশে ফিরে এই অন্যায়-অবিচারের বিচার করব। ইউনুস ও তাঁর অনুগতদের কাঠগড়ায় তুলব। এবং যারা আজকে বিচারহীনতার শিকার, তাদের প্রত্যেককে বিচার পাইয়ে দেব।'