শেষ আপডেট: 20 February 2024 13:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটি ভাষা ও একটি জাতির জন্ম। বিশ্বে এমন নজির নেই। আ মরি বাংলা ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে লেখা শপথকে নতজানু হয়ে প্রণাম করার দিন। আগামিকাল, বুধবার সেই একুশে ফেব্রুয়ারি। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যে কোনও কোণায় থাকা একটিমাত্র বাঙালিও এই দিনটা স্মরণ করেন শ্রদ্ধার সঙ্গে।
মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছর পূর্ণ হবে আগামিকাল। বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার, অনদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ সব দেশেই ভাষা শহিদদের স্মরণে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
সালটা ১৯৫২। বর্তমান বাংলাদেশ সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের গোটা বঙ্গসমাজ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদে পথে নামে। যার নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরতাজা পড়ুয়ারা। ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখরাঙানি, প্রশাসনের ১৪৪ ধারা, এমনকী গুলি-বেয়নেট উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।
দুর্বার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর পাকিস্তানের বর্বর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। তাতে মৃত্যু হয় সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত, রফিকের। মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও শাসকগোষ্ঠীর প্রভুসুলভ মনোভাবের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং ভাষার ভিত্তিতে বাঙালির জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।
ভাষা শহিদদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি সেদিন মাতৃভাষাকে মাতৃদুগ্ধের সমান মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পায় নব প্রেরণা। এরই পথ বেয়ে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ২০ বছর পর স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে অভূতপূর্ব এক আবেগ নিয়ে প্রথমবারের মতো মুক্ত পরিবেশে গাওয়া হয় সেই অমর সংগীত, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’