শেষ আপডেট: 14th December 2024 22:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের গুম করার অভিযোগ বারে বারে শোনা গিয়েছে। গুম হওয়া অনেকেই ফিরে আসেননি। রাজনীতি না করার শর্তে মুক্তি পাওয়া লোকজনকে সতর্ক করে দেওয়া হত বাইরে বেরিয়ে গুম পর্ব নিয়ে মুখ না খুলতে।
হাসিনা জমানার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের জন্য কমিটি গড়েছিল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার সেই কমিশন তাঁদের রিপোর্ট জমা করেছে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের অফিসে। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, কমিশনের অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে সাবের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা স্বয়ং গুমের নির্দেশ দিতেন।
কমিশন বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র্যাপিট অ্যাকশন ফোর্স বা র্যাব তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। হাসিনার জমানায় এই বাহিনীর বিরুদ্ধে গুম এবং খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছিল। মানবাধিকার হরণের অভিযোগে ওই বাহিনীর বেশ কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসন ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। আবার বাংলাদেশকে জঙ্গি মুক্ত করার কৃতিত্বও ওই বাহিনীকে দিয়ে থাকে কোনও কোনও মহল।
বাংলাদেশে প্রচার আছে গুম বা অপহরণ করে অপহৃতদের নিয়ে আয়না ঘরে রাখা হত। সেগুলি আসলে গোপন কুঠুরি। আরও প্রচার আছে ঢাকার সেনা নিবাসের ভিতরে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডাইরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স বা ডিজিএফআইয়ের দফতরে আয়না ঘর অবস্থিত। ছোট্ট ঘরগুলিতে কদাচিৎ সূর্যের আলো ঢুকলে অপহৃতরা নিজের ছায়া দেখতে পেত। সেই কারণে প্রতীকি অর্থে কুঠুরিগুলি মুখে মুখে আয়না ঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক রিপোর্টে জানিয়েছে, কমিশনের কাছে ১ হাজার ৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। তারমধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
হাসিনা ছাড়াও তাঁর সময়ে বেশ কয়েকজন পদস্থ আমলার বিরুদ্ধে গুম বা অপহরণের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ পেয়েছে কমিশন। বিচার বিভাগীয় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছেন আয়না ঘর পরিদর্শন করতে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, মহম্মদ ইউনুস কিছুদিনের মধ্যেই আয়না ঘর পরিদর্শনে যাবেন।