শেষ আপডেট: 3rd October 2024 10:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মোদী-ইউনুস বৈঠকের আগে বড় ঘটনা ঘটে গেল। নয়াদিল্লি থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিল ঢাকা।
আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের বৈঠকের ব্যাপারে দুই দেশই প্রাথমিকভাবে রাজি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কথা হতে পারে থাইল্যান্ডে। আগামী মাসে সেখানে বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ভারত ও বাংলাদেশ বিমস্টেকের সদস্য।
তার আগেই বড় ঘটনা ঘটে গেল আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ভারত সরকারের একাংশ মনে করছে বাংলাদেশের বাস্তবতা মেনে ইউনুস সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করা দরকার। বিশেষ করে ভারতীয় কোম্পানিগুলির ব্যবসায়িক স্বাস্থ্য এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে নয়া দিল্লিকে ঢাকার সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়েই এগোনো দরকার।
সেই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত খুব সাধারণ ঘটনা হিসেবে দেখার অবকাশ নেই বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা।
অবশ্য শুধু দিল্লির হাই কমিশনার মোস্তাফিজুরই নন, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং রাষ্ট্রসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী সদস্য তথা রাষ্ট্রদূতকেও দেশে ফিরে যেতে বলেছে ইউনুস প্রশাসন। সাধারণভাবে সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত বদল রুটিন বিষয়। তাছাড়া ইউনুস সরকার যে সাত রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরে আসতে বলেছে তাঁদের পাঁচজনের নভেম্বর-ডিসেম্বরে অবসরকালীন ছুটিতে যাওয়ার কথা। সেদিক থেকে আগামী দু-মাস তাঁরা দেশে থেকেই অবসর নিতেন। এই তালিকায় মোস্তাফিজুরও আছেন। আছেন ব্রিটেনের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসমিন।
তবে মোদী-ইউনুস বৈঠকের আগে মোস্তাফিজুরকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে কূটনৈতিক মহল ভাল চোখে দেখছে না। কারণ দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের সময় অভিজ্ঞ হাই কমিশনার তথা রাষ্ট্রদূতদের বিশেষ ভূমিকা থাকে। মনে করা হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে নতুন আঙ্গিকে সম্পর্ক স্থাপনের যে কথা ইউনুস বলেছেন তা বিবেচনায় রেখে হাসিনা জমানার রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দেশে ফেরার নোটিস ধরানো অনেক রাষ্ট্রদূতকেই হাসিনা সরকার চুক্তিতে নিয়োগ করেছিল তাঁদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে।
যে সাতজনকে ইউনুস প্রশাসন দেশে ফিরে আসতে বলেছে, তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসমিনকে নিয়ে দেশে বিএনপি-সহ একাধিক দলের আপত্তি ছিল।
সাধারণত তিন বছরের জন্য কোনও দেশে রাষ্ট্রদূতদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাসমিনের মেয়াদ ২০২১-এ শেষ হয়ে যায়। তারপরও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এই কূটনীতিককে ব্রিটেন থেকে সরানো হয়নি। তাঁর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাই কমিশন অফিসকে তিনি আওয়ামী লিগের দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ করে থাকে বিএনপি।
শেখ হাসিনার বোন রেহানা লন্ডনের বাসিন্দা। সাইদা মুনা তাসমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি রেহানার নির্দেশ মতো হাই কমিশন চালাতেন। অবশ্য হাসিনা দেশ ছাড়তেই সাইদা মুনার ভূমিকা বদলও বাংলাদেশে চর্চার বিষয় হয়। ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন হাসিনা। ৭ অগাস্ট সাইদা মুনা হাই কমিশন অফিসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে হাসিনার মুণ্ডপাত করেন। ইউনুসের কথায় তাল মিলিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট বলে দেগে দেন।