শেষ আপডেট: 14th December 2024 21:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এবং অন্যান্য প্রতিনিধি সভায় সংখ্যালঘুদের জন্য জনসংখ্যার অনুপাতে আসন সংরক্ষণের দাবি উঠল। শনিবার ঢাকায় এক আলোচনা চক্রে বক্তারা সকলেই এই দাবির সঙ্গে গলা মেলান বলে দাবি করেছেন আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব ড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।
তাঁর কথায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সমস্যা মূলত রাজনৈতিক। তাই সমাধানও হতে হবে রাজনৈতিকভাবে। সেজন্য স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে তাদের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা থাকতে হবে।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ‘বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছিল। সেখানে এই বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, বিএনপির সহ আর্ন্তজাতিক সম্পাদক তথা সাবেক এমপি ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির সহকারী সচিব এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আসরাফ আলি আকন, শ্রীকৃষ্ণ সেবা সংঘের সভাপতি নকুল সাহা, বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অরবিন্দ হাওলাদার প্রমুখ।
গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে যারা দেশকে মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী প্রচার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে, দেশকে অস্থিতিশীল করছে, তাদের কবর রচনা করতে চাই। তা সম্ভব হবে পৃথক নির্বাচন পদ্ধতি পুনরায় বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জনসংখ্যানুপাতে আসন সংরক্ষণ করতে হবে। সারা দেশের প্রাপ্ত ভোট অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি সদস্য মনোনীত করবে। যাদের মধ্য থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটাররা সরাসরি ভোটে স্ব স্ব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
আলোচনা সভায় অনেক বক্তা বলেন, আওয়ামী লিগ এখনও বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। অথচ পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা অব্যাহত থাকলে তা করতে পারত না। প্রতিনিধিত্ব শূন্য হয়ে হিন্দু সম্প্রদায় দিন দিন বিলুপ্তির দিকে ধাবমান।
তাঁরা আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুরা সংখ্যায় ছিল ৩৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান বলছে তা কমে হয়েছে ৭.৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০-২২ বছরে এদেশ হিন্দু শূন্য হবে। তারা আরও বলেন, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লিগ তাদের শাসনামলে সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব দেয়নি। অন্যান্য দল থেকেও সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব অনিশ্চিত। অর্থাৎ বলা যায়, আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসুক, জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব শূন্য থাকবে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে বহির্বিশ্বে নিন্দার বিষয়ে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের মান-মর্যাদা, সব অর্জন সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে ধূলিসাৎ। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইতিহাস পেছনে ফেলে বাংলাদেশকে জঙ্গি, মৌলবাদী তকমা জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্ম অবমাননার অজুহাতে আওয়ামী লিগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, ‘অনুসন্ধানে জানা গেছে বহু ঘটনায় ইন্ধনদাতা আওয়ামী লিগ। তাতে অন্যান্য দলের কর্মীরাও অংশগ্রহণ করেছে। যে কারণে কোনও ঘটনারই বিচার করেনি কোনও দল।