শেষ আপডেট: 7th August 2024 00:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সেনার তত্ত্বাবধানেও বাংলাদেশের হিংসায় বিরাম নেই। অগস্টের গোড়া থেকে শুরু হওয়া হিংসার আগুনে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৭০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর।
রবিবার দুপুরেই সংখ্যাটা দেড়শ ছাড়িয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের খবর, মর্গে নতুন করে ২১টি দেহ এসেছে। এর মধ্যে চারজন পুলিশ সদস্য, একজন ব়্যাবের এবং একজন বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) সদস্য রয়েছেন।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তার কিছুটা আন্দাজ মিলতে পারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের পরিসংখ্যান থেকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই গত তিন দিনে ৬৮ জনের দেহ আনা হয়েছে। এর মধ্যে গত রবিবার ১১ জনের, সোমবার ৩৭ জনের এবং মঙ্গলবার ২১ জনের।
এদিন পুলিশের যে চারকর্মীর দেহ ঢাকার মর্গে আনা হয়েছে, এরা হলেন- পুলিশের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম (৪৪), পুলিশ সদস্য মনির হোসেন (৪৫), মাহফুজুর রহমান (২৪) এবং সঞ্জয় কুমার দাস (৩১)। একইভাবে মৃত্যু হয়েছে বিজিবি সদস্য আবদুল আলিম শেখের (৪৬) এবং র্যাব সদস্য আনোয়ার হোসেনের (৫৭)। এই ৬ জন পুলিশ কর্মীর মধ্যে আনোয়ারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাকি পাঁচজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উন্মত্ত জনতা।
প্রসঙ্গত, কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে কোটা বাতিলের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হলেও প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ফের আন্দোলনে নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষনেতৃত্ব।
গত শনিবার থেকে নতুন করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার জেরে সোমবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে বিশেষ বিমানে দেশ ছেড়ে পালান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন। মনে করা হয়েছিল, এরপর পরিস্থিতি হয়তো শান্ত হবে। এমনকী সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনকারীদের হিংসা পরিস্থিতি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। তারপরই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে।
এমনকী আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ৩টের আগেই বাংলাদেশের সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন। সেনাবাহিনীর একাধিক শীর্ষপদেও বড়সড় রদবদল আনা হয়েছে। আন্দোলনকারীদে দাবি মেনে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য আন্দোলনকারী নেতৃত্বকে নিয়ে বৈকেও বসেছেন বাহিনীর প্রধানরা। বৈঠকে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্টজনেরা। কোন পথে শান্তি ফিরে আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।