শেষ আপডেট: 2nd January 2025 12:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের চট্টগ্রামের হিন্দু সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আর্জি ফের খারিজ করে দিল চট্টগ্রাম আদালত।
চিন্ময়কৃষ্ণকে গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছিল মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ। তারপর থেকে তিনি জেলেই রয়েছেন। এর আগে একাধিকবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে আশা করা হয়েছিল যে তিনি জামিন পাবেন। কিন্তু তেমনটা হল না।
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মহম্মদ সাইফুল ইসলামের আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর এই জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। গত ২৭ নভেম্বর থেকে এই সাধু চট্টগ্রাম আদালতে বন্দি।
বুধবার রাতে ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বারোজন আইনজীবী চট্টগ্রাম যান। বৃহস্পতিবার তাঁরা চিন্ময়ের হয়ে সওয়াল করেন। তাঁরা বলেন, চিন্ময়কৃষ্ণ একজন সাধু। তিনি দাগি আসামি নন। তাছাড়া কারাগারে তিনি একাধিকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর চিকিৎসা দরকার।
সরকার পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টা বলেন, চিন্ময়কৃষ্ণের নাম দেশদ্রোহিতা ছাড়াও আরও কয়েকটি মামলায় রয়েছে। পুলিশের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তদন্ত বিঘ্নিত হবে।
চিন্ময়ের নাম ইতিমধ্যে একটি হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত চত্ত্বরে খুন হন তরুণ আইনজীবী শাইফুল ইসলাম। তাঁকে চিন্ময়ের অনুগামীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে এফআইআরে। সেই মামলায় পরে সম্মিলিত হিন্দু জাগরণ ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক চিন্ময়ের নাম যুক্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার চিন্ময়ের জামিন মামলার শুনানির কারণে চট্টগ্রাম আদালতে ছিল নজিরবিহীন নিরাপত্তা। পুলিশ ছাড়াও মোতায়েন করা হয় সেনা এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির জওয়ানদের। আদালতে প্রবেশের সময় প্রত্যেকের পরিচয়পত্র যাচাই করা হয়। চিন্ময় অনুগামীদের আদালত এলাকায় ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।
গত ২৫ অক্টোবর দেশদ্রোহিতার অভিযোগে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন চট্টগ্রামের এক বিএনপি নেতা। পুলিশ মামলা গ্রহণ করলেও ওই নেতার পাশে দাঁড়ায়নি বিএনপি। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু মামলা প্রত্যাহার না করায় ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেফতার করা হয় চিন্ময়কৃষ্ণকে। এই সাধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের লালদিঘির ময়দানে হওয়া হিন্দু মহাজোটের সভায় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। সেখানে ইসকনের পতাকা জাতীয় পতাকার উপরে টাঙানো হয়েছিল বলে অভিযোগ।
চিন্ময় অনুগামীদের বক্তব্য মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের হওয়ার একমাস পর সাধুকে গ্রেফতারের কারণ ভিন্ন। সম্মিলিত হিন্দু জাগরণ ঐক্য মঞ্চের ডাকে বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলিতে সভা করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। রংপুরের প্রথম সভায় ব্যাপক ভিড় হতেই সরকার বাকি সভাগুলি ভেস্তে দিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। আন্দোলনের মুখ চিন্ময়কে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে জেলে আটকে রাখা হয়েছে।