শেষ আপডেট: 2nd January 2025 17:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বৃহস্পতিবারই চট্টগ্রামের আদালত ধৃত সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এদিন প্রায় তিরিশ মিনিট ধরে চলা শুনানি শেষে সরকারপক্ষের আইনজীবীর আবেদন মেনে বিচারক মহম্মদ সফিকুল ইসলাম ধৃত সন্ন্যাসীর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। বিচারক জানান, রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হতে পারে। তাই তাঁকে কোনওভাবেই জামিন দেওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে চিন্ময়ের জামিন নাকচ হলেও এদিন আদালতে জোর সওয়াল করেন আইনজীবী অপূর্ব ভট্টাচার্য। দ্য ওয়ালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এদিন আইনজীবী জানান, ‘আমরা আজ সুপ্রিম কোর্ট বার থেকে ১১ জন আইনজীবী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর জন্য চট্টগ্রাম আদালতে জামিন চাইতে গেছিলাম। সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করেছে। রাষ্ট্রদোহী বা জাতীয় পতাকা অবমাননার যে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তার কোনওটাই যুক্তিযুক্ত নয়।’
আইনজীবী আরও মনে করিয়ে দেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করতে গেলে, আগে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন। এখানে এফআইআরে তার কোনও উল্লেখ নেই।’ অন্যদিকে চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননা যে অভিযোগ উঠেছে তা খারিজ করে এদিন অপূর্ব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘জাতীয় পতাকা অবমাননার কোনও প্রশ্ন নেই। উনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে সবসময় সম্মান করেছেন। তার একাধিক তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে আছে। আদালত চাইলে অবিলম্বে আমরা তা পেশ করতে পারি।’
পাশাপাশি এদিন আদালতে যেতে তাঁদের কোনওরকম অসুবিধা হয়নি বলেই জানিয়েছেন আইনজীবী অপূর্ব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘সরকারের আইনশৃঙ্খলা বিভাগ সবরকম সাহায্য করেছে। আদালতের তরফেও আমরা সহযোগিতা পেয়েছি। শীঘ্রই জামিনের অনুমতি চেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব।’
গত বছর ২৫ অক্টোবর চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি সমাবেশ হয়। তারপরেই জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের হয়। গত বছর ২৫ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এর পরদিন তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় চট্টগ্রামের আদালত।
পরে আদালত চত্বরে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেই সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের এক আইনজীবীকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় চিন্ময়কৃষ্ণ এবং তাঁর আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিনের শুনানি ছিল। কিন্তু প্রাণের ভয়ে ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করতে যাননি। তাঁর হয়ে সওয়াল করতে গিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তাঁকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। চিকিৎসার জন্য বর্তমানে কলকাতায় রয়েছেন চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।