শেষ আপডেট: 25th November 2024 20:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও জনপ্রিয় হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশ পুলিশ। রাজধানী ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে ঢাকা মহানগর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস যিনি চিন্ময় প্রভু নামেও পরিচিত তিনি চট্টগ্রামে হাটহাজারি উপজেলায় অবস্থিত ইসকন মন্দির পুন্ডরিকধামের অধ্যক্ষ।
সোমবার গ্রেফতারের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সে দেশের বিভিন্ন এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিক্ষুব্ধ সনাতনী ও বিভিন্ন মঠ মন্দিরের সাধু সন্তরা মিছিল নিয়ে চেড়াগি পাহাড় এলাকায় জড়ো হয়ে চিন্ময়কে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পাশাপাশি অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।
মিছিল ও সমাবেশ থেকে স্লোগান দেওয়া হয়,-'চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চাই, চিন্ময় প্রভুর কিছু হলে জ্বলবে আগুন সারাদেশে, জেগেছে রে জেগেছে সনাতনী জেগেছে,' ইত্যাদি। এই মুহূর্তে রাজধানী ঢাকায় আন্দোলনের পীঠস্থান শাহবাগ এলাকা অবরুদ্ধ। হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। যান চলাচল বন্ধ। সারা রাত অবস্থানের কর্মসূচি নিয়েছে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের একাধিক সংগঠন।
বিক্ষোভ মিছিল শহরের চেড়াগি পাহাড় মোড়ে আসার পর মোমিন রোডে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে মিছিল চেড়াগির মোড়ে সমবেত হয়। এ সময় মোমিন রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে চেড়াগি পাহাড়ের মোড়ে সমবেত হচ্ছেন। অভিযোগ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষুব্ধ হিন্দুদেরকে চেড়াগি পাহাড় মোড়ে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
গত ২২ নভেম্বরও চিন্ময় কৃষ্ণ দাস রংপুরে সনাতনীদের বিশাল সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন। এর আগে তিনি গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদিঘি ময়দানে স্মরনকালের বৃহৎ সমাবেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতনের প্রতিবাদে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি সনাতনীদের আট দফা দাবি দাওয়া নিয়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছিলেন।
এরপর গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জন সনাতনী ধর্মাবলম্বীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়। ফিরোজ খান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি এই মামলা দায়েরের পর রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস নামে দু'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা এখনও জেলে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা রাইটস অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ অবিলম্বে চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তি দাবি করেছে। একই দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক পরিষদ।