দ্য ওয়াল ব্যুরো: আওয়ামী লিগের (Awami League) এক নেত্রীকে গ্রেফতার করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ (Narayanganj, Bangladesh) জেলায় ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। ঢাকার অদূরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি-কে (Selina Hyatt Ivy)  গ্রেফতার করতে শহরের দেওভোগ এলাকায় পুলিশ যায়। আওয়ামী লিগের ওই নেত্রী জানিয়ে দেন পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন। তবে সকালের আগে বাড়ি ছাড়বেন না।

পুলিশ তাঁকে রাতেই ধরে নিয়ে যেতে বিশাল পুলিশ বাহিনী জড়ো করে। হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারেরা। কিন্তু সাবেক মেয়রকে বাড়ি থেকে বের করতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬’টা বেজে যায়। কারণ মাঝরাতেই শহরের রাস্তার দখল নেয় নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দারা। ছয়টি জায়গায় বড় আকারের অবরোধ তৈরি করা হয়। ফলে পুলিশের পক্ষে জনতার অবরোধ ভাঙার সুযোগ ছিল না।

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের মতে, গত বছর ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ জুড়ে আওয়ামী লিগের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন। কিন্তু গ্রেফতারির প্রতিবাদে এমন প্ররিরোধ দেখা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পরিস্থিতি এমন তৈরি হয়েছিল যে পুলিশ বলপ্রয়োগ করলে দু-পক্ষেরই প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। আওয়ামী লিগ সমর্থকেরাও তৈরি হয়ে এসেছিলেন।

পালা বদলের পরও পেশায় চিকিৎসক আওয়ামী লিগের এই নেত্রী এলাকাতেই ছিলেন। এলাকায় জনপ্রিয়তার কারণেই গণ অভ্যুত্থানের পরও বাড়ি ছাড়েননি। পার্টির কর্মীরা তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল। যদিও একাধিক খুনের মামলায় তাঁর নাম জুড়ে দেওয়া হলেও তাঁকে একদিন গ্রেফতারের চেষ্টা করেনি। তবে সরকার আদালত থেকে তাঁর দেশত্যাগের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আদায় করে রেখেছে। ফলে তাঁর দেশ থেকে পালানোর কোনও সম্ভাবনা ছিল না। তারপরও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে সব মহলে।

একটি সুত্র বলছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারের শীর্ষ মহলের অগোচরে দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে চলে যাওয়ায় মহম্মদ ইউনুসের সরকার আর ঝুঁকি নিচ্ছে না। যদিও বৈধ পথেই দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সজ্জন রাজনীতিক হিসাবে পরিচিত সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ।

দ্বিতীয় কারণটি হল, আওয়ামী লিগ-সহ দলের বাকি গণসংগঠন তথা অঙ্গ সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করার ভাবনাচিন্তা নতুন করে শুরু হয়েছে। তেমন পদক্ষেপ করা হলে যারা প্রতিবাদে রাজপথে নামতে পারেন, আইভি তাঁদের একজন। সেই কারণে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হল। আরও অনেক নেতাকেই গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দল। তবে সেলিনা হায়াত আইভি’কে গ্রেফতার করতে গিয়ে প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীও চিন্তায় পড়েছে।