শেষ আপডেট: 4th March 2025 17:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় (Bangladesh capital Dhaka) প্রকাশ্যে (public place) ধূমপান (smoking) করায় লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন দুই তরুণী। ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। একাধিক সংগঠন প্রতিবাদে পথে নেমেছে। সমাজমাধ্যমে (social media) চলছে প্রতিবাদের ঝড়। প্রশ্ন উঠেছে প্রকাশ্যে ধূমপান করলে সাজা দেওয়ার অধিকার কি সহনাগরিকদের আছে। পুলিশ কেন লাঞ্ছনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।
মঙ্গলবার ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস (Md Yunus) এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জানতে চান। বৈঠকে জানানো হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং দুই তরুণী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিবাদ মিটিয়ে নিয়েছেন। গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দু'পক্ষকেই থানায় নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে লিখিতভাবে দু পক্ষ মীমাংসাপত্রে সই করেন।
উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকের পর উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওনাল হাসান সাংবাদিক বৈঠকে জানান, দু'পক্ষই মীমাংসা সুত্র মেনে নেওয়ায় পুলিশের পক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। সাংবাদিক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiul Alam), উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার (AbulnKalam Azad Majumdar) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দা রিজওনান হাসান বলেন, নীতি পুলিশি কিংবা মব হামলা অর্থাৎ দলবদ্ধ হয়ে মারধরের ঘটনার কোনও স্থান নেই বাংলাদেশে। দুই তরুণীকে লাঞ্ছনার ঘটনা সরকার সমর্থন করে না। কিন্তু আক্রান্ত দুই তরুণী আপসে সব মেনে নেওয়ায় নতুন করে মামলা রুজু করে ব্যবস্থা গ্রহণের অবকাশ নেই।
ঘটনার সুত্রপাত রবিবার সন্ধ্যায়। দলবদ্ধ হয়ে ঘিরে ধরে একদল পুরুষ দুই তরুণীকে লাঞ্ছনা করেছেন বলে অভিযোগ। রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকার তেজগাঁওয়ের লালমাটিয়া এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে তাঁরা চা খেতে খেতে সিগারেট খাচ্ছিলেন।
ঢাকার ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় হওয়ার আরও এক কারণ হল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া। তিনি বলেছেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই মন্তব্যের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন বহু মানুষ। তাদের বক্তব্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শুধু দুই তরুণীর আইন ভঙ্গের কথা বলেছেন। তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি চেপে গিয়েছেন। এইভাবে তিনি দলবদ্ধ হামলা বা মব অ্যাটাককে মান্যতা দিয়েছেন। কেউ আইন ভাঙলেই তার উপর পাবলিক হামলা করতে পারেন না।
ঘটনার সুত্রপাত এক ব্যক্তির প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে। তিনি চায়ের দোকানে বসে দুই তরুণীর ধূমপান নিয়ে আপত্তি করেন। তাঁর প্রতিবাদের জবাবে এক তরুণী তাঁর গায়ে গরম চা ছুড়ে মারেন বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে এরপর সেই ব্যক্তি তার পরিচিতদের ডেকে দুই তরুণীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছনা করেন। সমাজমাধ্যমে ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়লেও পুলিশ মামলা দায়ের না করাতেও বহু মানুষ ক্ষুব্ধ।
মঙ্গলবার ঘটনাটি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নতুন তথ্য হাজির করে। তারা জানায়, অভিযোগকারী দুই তরুণী মিটমাট করে নেওয়ায় পুলিশের পক্ষে আর পদক্ষেপ করার সুযোগ ছিল না।