শেষ আপডেট: 8th December 2024 09:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কদিন আগে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লি উদ্বিগ্ন ঠিকই, তবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে এর প্রভাব পড়বে না। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশকে আলু, পেঁয়াজ, চাল, জল পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটতে চায় না ভারত (India Bangladesh trade)।
কিন্তু কূটনীতি ও রাজনীতি তো সব সময়ে একই অক্ষরেখায় চলে না। বরং রাজনীতিতে অনেক সময়েই বাস্তবকে অস্বীকার করে স্রেফ একটা ন্যারেটিভ তৈরির জন্য ইচ্ছেমতো অনেকেই অনেক কিছু বলেন। যেমন কদিন আগে পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হুমকি দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হলে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি না হলে ভারত থেকে পেঁয়াজ ও আলু রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তা নিয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদী আর বাংলাদেশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সোশাল মিডিয়ায় তর্কও বেঁধেছে বিস্তর।
এখন কৌতূহলের বিষয় হল, ভারত আলু, পেঁয়াজ, চালের জন্য ভারতের উপর সত্যি কতটা নির্ভরশীল?
বাণিজ্যের পরিসংখ্যান
ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিকারক দেশ। সর্বশেষ অর্থ বছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
আলু
বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের আগে বাংলাদেশ কখনও আলু আমদানি করেনি। বরং বাংলাদেশ আলু রফতানি করত। তবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ভারত থেকে ১৭ লাখ ডলারের আলু আমদানি করতে বাধ্য হয় ঢাকা। কারণ ঘরোয়া চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জোগান দিতে পারছিল না।
পেঁয়াজ
বাংলাদেশে বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদা ২৭-২৮ লাখ মেট্রিক টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন ছিল ৩৮ লাখ মেট্রিক টন। তবু ভারত থেকে প্রায় ২০ কোটি ডলারের পেঁয়াজ আমদানি করে বাংলাদেশ।
চাল
শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বনির্ভর দাবি করলেও তারা ধারাবাহিক ভাবে চাল আমদানি করে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ভারত থেকে ১৫ কোটি ডলারের চাল আমদানি করে বাংলাদেশ। এর আগের বছরে আমদানির পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ডলার।
ডাল
ভারত বাংলাদেশকে ডাল রফতানি করে না। কারণ, ভারতে ডালের যে চাহিদা রয়েছে, সেই তুলনায় উৎপাদন হয় না। তাই ভারতকেই ডাল আমদানি করতে হয়। কাউকে ডাল রফতানি করার মতো পরিস্থিতি ভারতের নেই।