শেষ আপডেট: 10th January 2025 17:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রকাশ্য সভায় বুক ফুলিয়ে নেতা দাবি করছেন, গণ অভ্যুত্থানের সময় এনায়েতপুর থানায় ঢুকে ১৩ পুলিশ কর্মীকে কীভাবে খুন করেছেন। নেতার দাবি, বাংলাদেশ পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়াই ছিল ওই হামলার উদ্দেশ্য।
বিএনপির সিরাজগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানের এমন বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। ফলে অস্বস্তি বেড়েছে দলের। খালেদা জিয়ার দলের নেতারা এখনও পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া দেননি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে বলে প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে যাচ্ছেন তারা। অন্যদিকে, অসন্তোষ বাড়ছে পুলিশে।
দুদিন আগেই চট্টগ্রামে এক সাবেক ওসিকে বিএনপির নেতা কর্মীরা বেধড়ক মারধর করে। বাংলাদেশ সিআইডি-তে কর্মরত ওই পুলিশ অফিসার শেখ হাসিনার জমানায় বিরোধীদের নিপীড়ন, নির্যাতন করতেন বলে বিএনপির অভিযোগ।
৫ অগাস্ট গণ অভ্যুত্থানের আগের দিন বাংলাদেশের উত্তর প্রান্তের অবস্থিত সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার ঘটনাটি ছিল হাড় হিম করা সন্ত্রাসের দৃষ্টান্ত। হামলাকারীরা থানা ঘিরে ফেললে পুলিশ কর্মীরা আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাঁদের আর্জি শোনা হয়নি। থানায় ঢুকে পিটিয়ে, কুপিয়ে ১৩ পুলিশ কর্মীকে হত্যার পর দেহগুলি গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ভয়ে পুলিশ সদর থেকে পুলিশ কর্মীরা সহকর্মীদের বাঁচাতে যায়নি।
ওই ঘটনা জানাজানি হতে নিন্দার ঝড় ওঠে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবর হয়। বিএনপি নেতারাও হামলাকারীদের কঠোর সাজা দাবি করেন। তাঁরা দাবি করেন, ওই ঘটনা জামায়াতে ইসলামীর কাজ।
কিন্তু ভাইরাল ভিডিওতে বিএনপির সিরাজগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানকে রীতিমতো গর্ব করে বলতে শোনা গিয়েছে, কীভাবে থানায় ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালান তাঁরা।
গণ অভ্যুত্থানের পর পরই বাংলাদেশের অধিকাংশ থানা পুলিশ শূন্য হয়ে পড়েছিল। প্রাণের ভয়ে থানায় আসা বন্ধ করে দেন কয়েক হাজার পুলিশ। সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চলে আওয়ামী লিগের নেতা কর্মী ও হিন্দুদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতন। এখনও সব পুলিশ কর্মী কাজে যোগ দেননি। অভ্যুত্থানের পরের পনেরো দিনে হিন্দুদের বাড়ি, অফিস, ব্যবসা কেন্দ্রে হামলার ২২০০-র বেশি ঘটনা ঘটে বলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক পরিষদের দাবি। আওয়ামী লিগের দাবি ৫ অগাস্ট থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের তিনশোর বেশি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশের অনুপস্থিতিকে কাজে লাগায় হামলাকারীরা।
এই পরিস্থিতিতে দলের সিরাজগঞ্জের নেতার মন্তব্যে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বিএনপি। পার্টির নেতাদের আশঙ্কা, এরফলে পুলিশের মধ্যে বিএনপিকে নিয়ে অসন্তোষ আরও বেড়ে যাবে।