শেষ আপডেট: 28th January 2025 22:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গণ অভ্যুত্থানের ছয় মাসের মাথায় মহম্মদ ইউনুসের সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে আওয়ামী লিগ। ক’দিন আগেই দ্য ওয়াল-এ লেখা হয়েছিল, আওয়ামী লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা দলকে প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার আওয়ামী লিগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মোট নয় দিন গোটা বাংলাদেশে নানা কর্মসূচি পালন করবে।
মহম্মদ ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে মোট ১৩ দফা অভিযোগ এনে পথে নামার ডাক দিয়েছে শেখ হাসিনার দল।
তারা জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার পর্যন্ত লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করবেন দলের নেতা-কর্মীরা। ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দল প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করবে। ১০ ফেব্রুয়ারি, সোমবারও হবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি, রবিবার অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে দল। ১৮ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লিগ বলেছে, এই সব কর্মসূচিকে বাধা সৃষ্টি করা হলে দল বড় আন্দোলনের ডাক দেবে।
ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লিগের অভিযোগের মধ্যে আছে—
· আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলা। এগুলি প্রত্যাহার করতে হবে।
· হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আদিবাসী জাতি গোষ্ঠীর উপর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপসনালয়ে হামলা ও ভাঙচুর।
· মেটিক্যুলাস ডিজাইনের মাধ্যমে শিশু, ছাত্র-জনতা,পুলিশ বাহিনীর ৩ হাজারের বেশি সদস্য এবং আনসার বাহিনীর সদস্যদের হত্যা। সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি।
· আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও দেশব্যাপী খুন-ধর্ষণ-চাঁদাবাজি-ডাকাতি-রাহাজানির প্রতিবাদ এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দাবি।
· সারা দেশে আওয়ামী লিগের নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যক্তিদের গুম, খুন ও হত্যা।
· দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি।
· মহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মামলা প্রত্যাহার। গ্রামীণ ব্যাংককে ৫ বছরের কর অব্যাহতি প্রদান এবং ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধি করে জনগণের উপর বোঝা চাপানো।
· সরকারের প্রতিটি সেক্টরে লাগামহীন দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা পাচারের প্রতিবাদে*
· শেয়ারবাজারে অর্থ কেলেঙ্কারি, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস।
· সুফিসাধক, বাউল সঙ্গীত শিল্পী, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের উপর আক্রমণ ও শত শত বছর পুরনো মাজারে হামলা ও ভাঙচুর।
· গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা বন্ধের ফলে নারী শ্রমিকসহ লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়ার প্রতিবাদ।
· গণ-মামলা, নির্বিচারে গণ-গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও রাজবন্দিদের মুক্তি।
· অবৈধ ও অসাংবিধানিক দখলদার খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের পদত্যাগ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী বাংলাদেশ আজ ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত জনপদ। অবৈধ ও অসাংবিধানিক জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলদার, ইতিহাসের জঘন্যতম রক্তপিপাসু ফ্যাসিস্ট ইউনূস ও তাঁর দোসরদের সীমাহীন ধ্বংসযজ্ঞ ও তাণ্ডবে ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মত্যাগ এবং ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি আজ প্রতিহিংসার দাবানলে দাউ দাউ করে জ্বলছে। মানবাধিকার আজ ভূ-লুণ্ঠিত, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা লুপ্ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ বিসর্জিত। আইনের শাসন অস্তমিত। এমতাবস্থায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (আওয়ামী লিগ এখনও হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি করে) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলুন।