বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ
শেষ আপডেট: 23rd January 2025 17:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চলতি বছরের শেষ অথবা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় সংসদ ভোট হবে বাংলাদেশে। নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বৃহস্পতিবার কমিশনের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, এক বছরের মাথায় ভোট হবে ধরে নিয়ে কমিশন প্রস্তুতি শুরু করেছে। আগামী মাসে শুরু হবে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ।
শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লিগ কি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে? এই প্রশ্নের জবাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের বক্তব্য, চলতি আইনে আওয়ামী লিগের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই। কারণ দলটি দেশে নিষিদ্ধ নয়।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের পরও আওয়ামী লিগকে ভোট অংশ নিতে দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে গঠিত কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে খুন, গুম, অর্থ পাচারের মতো গুরুতর এবং মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচন অংশ নিতে না দিতে। এই মর্মে আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছে বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ওই কমিশন। ওই সুপারিশ মানা হলে দলগতভাব আওয়ামী লিগের জন্য বাধা তৈরি না হলেও শেখ হাসিনা-সহ দলটির প্রথমসারির নেতারা বলতে গেলে কেউই ভোটে অংশ নিতে পারবেন না।
আওয়ামী লিগকে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক পোস্টে এই প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লিগ এবং তার গণহত্যার সমর্থক সাংবাদিক ও সমর্থকরা এক ধরনের বিভ্রমে রয়েছেন যে, দেশের নির্বাচন হলে তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, এটি ঘটবে না, যতক্ষণ আওয়ামী লিগ তাদের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ স্বীকার করে এবং হত্যাকাণ্ড, তাণ্ডব এবং গুমের সঙ্গে যুক্ত লোকদের দল থেকে বের করে দেয়।’ তিনি আরও লিখেছেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত আওয়ামী লিগ সদস্য এবং তাদের আদেশ পালনকারীদের বিচার করতে হবে।’
শফিকুল আরও লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে কীভাবে অস্ত্রহীন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল জুলাই ও আগস্ট মাসে। আমি মানুষের প্রতি আহ্বান জানাব যেন তারা যাত্রাবাড়ী হত্যাকাণ্ডের উপর নির্মিত ডকুমেন্টারি দেখেন। আরও ডকুমেন্টারি আসছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাদের ক্যাম্পাসে ঘটিত অপরাধগুলি তুলে ধরতে ডকুমেন্টারি তৈরি করছে। এবং আরও কিছু নতুন নাগরিক গ্রুপের প্রচেষ্টা রয়েছে যারা শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে ঘটে যাওয়া প্রতিটি হত্যাকাণ্ড দলিলবদ্ধ করছে।’
জাতীয় সংসদ ভোট নিয়ে বাংলাদেশে বিগত কয়েক মাস যাবত বিতর্ক চলছে। অম্তর্বর্তী সরকার পুরোদস্তুর সংস্কার শেষ করে ভোট করানোর পক্ষে ছিল। কিন্তু বিএনপি-সহ কয়েকটি দল এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন করার দাবিতে সরব হয়। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দুটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল রাজনৈতিক দলগুলিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়। তারা পুরো সংস্কার শেষে নির্বাচন চাইলে ভোট হতে পারে ২০২৬-এর মাঝামাঝি নাগাদ। অর্ধেক সংস্কার শেষে ভোট চাইলে তা করা যেতে পারে চলতি বছরের শেষে।
বিএনপি দাবি করে আসছিল ভোট নিয়ে সরকারকে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে হবে। বৃহস্পতিবার স্বয়ং এক নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা করেন, ভোটের জন্য বড়জোর আর এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।