সংগৃহীত ছবি
শেষ আপডেট: 7 May 2025 23:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জঙ্গিদের মদত, সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করল আওয়ামী লিগ। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ক'দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দিনে দেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে সরব হয়েছে হাসিনার দল আওয়ামী লিগ।
নতুন তৈরি দল জাতীয় নাগরিক পার্টি পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার বিকালে বিবৃতি দেয়। তাতে আওয়ামী লিগকে কার্যত সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করে বিদেশে থাকা ওই দলের নেতা কর্মীদের বাংলাদেশে প্রবেশ আটকে দেওয়ার দাবি তোলা হয়।
জবাবে আওয়ামী লিগ এক বিবৃতিতে বলে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অর্বাচীন ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশপ্রণোদিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বলেছে, দেশের সুমহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাবিরোধী শক্তির গর্ভে জন্ম হয় এনসিপির। এদের প্রধান লক্ষই হল, সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা। আর তাদের অর্বাচীন কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক কর্মসূচির মূল এজেন্ডা হল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করা। এরা সন্ত্রাসবাদের প্রতিভূ এবং উগ্র জঙ্গিবাদী মতাদর্শের উপজাত। এ সকল খুনি ও সন্ত্রাসীদের মুখে শান্তি ও স্থিতিশীলতার কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়।
আওয়ামী লিগ বলেছে, এই অর্বাচীন ও বালখিল্যদের বোধগম্য হওয়া দরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের হাত ধরে এসেছে। যে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য তাদের মায়া কান্না সেটা অর্জন ও তা সমুন্নত করেছে আওয়ামী লিগ। দেশবাসী আজ ভাল করেই জানে, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রণীত 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়' নীতি মেনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এ কথা অনস্বীকার্য যে, জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল রাষ্ট্রনায়কোচিত অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণেই উপমহাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় ছিল। অথচ এই খুনি-সন্ত্রাসীগোষ্ঠী রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে বিপরীত পথে পরিচালিত করে। পাকিস্তানের প্রেস্ক্রিপশনে প্রতিবেশী ভারতে হামলার হুঁশিয়ারি দেয়, সেভেন সিস্টার্স ভেঙে ফেলা এবং পশ্চিমবঙ্গ দখলের হুমকি দেয়। পাশ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়ে এ ধরনের শিষ্টাচার বহির্ভূত অকূটনৈতিক বক্তব্য বাংলাদেশকে অবশ্যম্ভাবীভাবে চরম হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
আওয়ামী লিগ বলেছে, ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই চালিয়েছে সেটা নিয়ে এনসিপি ও সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা তথাকথিত ভারতবিরোধিতা করতে গিয়ে সন্ত্রাসবাদের পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে এবং এই লড়াইয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ফেলার মতো অর্বাচীন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্য ও পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এসব খুনি ও সন্ত্রাসীরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলির সঙ্গে গাটছড়া বাঁধছে। আবার অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের। এই রাষ্ট্রের ভিত্তি মানুষে মানুষে মানবিক সম্পর্ক। তাই সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংহতি জ্ঞাপনকারীদের মুখে জাতীয় ঐক্যের কথা বড্ড বেমানান।