শেষ আপডেট: 14th August 2024 18:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বুধবার ঢাকায় আরও একটি খুনের মামলা দায়ের হল। তাঁর সঙ্গেই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে আরও ২৪ জনের নাম। সেই তালিকায় নাম আছে আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরেরও। বুধবারের মামলাটি নিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে দু'দিনে তিনটি খুনের মামলা দায়ের হল। মঙ্গলবার জোড়া মামলা দায়ের হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বুধবার ঢাকায় জানিয়েছেন, দেশত্যাগী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হওয়া সমস্ত মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার চেষ্টা হচ্ছে। সরকার এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হলে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে প্রতিটি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই সহজ হয়ে যাবে। বিদেশে আত্মগোপন করা অভিযুক্তদেরও মামলায় টেনে আনা সহজ হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ মুজিবকে হত্যায় জড়িতদের বিচার করতে শেখ হাসিনাই ওই ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন।
বুধবার হাসিনার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেন নিহত ফয়জুল ইসলামের দাদা রাজীব। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ফয়জুল পুলিশের গুলিতে নিহত হন। মামলায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এবং আরও ২৪ জনের ষড়যন্ত্রের বলি হয় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। ঢাকার মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক হুমায়ুন আহমেদ কবির মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর আওয়ামী লিগের অন্য নেতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লিগের দুই বর্ষীয়ান নেতা আনিসুল হক এবং সলমন এফ রহমানকে ঢাকার সদর ঘাট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁরা ছদ্মবেশ ধারণ করে পালাচ্ছিলেন বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত।
এদিকে, বাংলাদেশের সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছেন, সাবেক সরকারের অনেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লিগের বেশ কিছু নেতা বর্তমানে সেনা বাহিনীর আশ্রয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা তাঁদের আশ্রয় দিয়েছি। কারণ, তাঁদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে কারও জীবনের ঝুঁকি থাকলে আমরা তাঁদের আশ্রয় দিয়ে থাকি। সেনা প্রধান বলেন, আমরা চাই না এই মানুষেরা বিচার বহির্ভূত হামলার শিকার হোন।
হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন আসাদুজ্জামান খান। বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা মঙ্গবার ওই সাবেক মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীর সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করে দিয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আলি আরাফত এবং টেলিকম মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের। পলক-সহ আওয়ামী লিগের বহু নেতা-মন্ত্রীর নাম ইমিগ্রেশন বিভাগকে জানিয়ে দিয়ে বলা হয়েছে, এঁদের দেশ ছাড়তে দেওয়া যাবে না। আটকাতে হবে। সেই মতো ক’দিন আগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দেশ ছাড়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।