ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদের থানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
শেষ আপডেট: 19th September 2024 23:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঘটনাস্থল দেশের দুটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। একটি ঢাকা আর একটি জাহাঙ্গিরনগর। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র ক্যাম্পাসের মধ্যে দু’জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ে ফজলুল হক মুসলিম হলের ছাত্ররা এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারে। অন্যদিকে, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত ব্যক্তি শামিম আহমেদ ওরফে শামিম মোল্লা ছাত্র লিগের সাবেক নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত যুবকের নান তোফাজ্জেল হোসেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তবে তাঁর দেহ পরিজনেরা নিতে আসেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা সকলেই ছাত্র। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল অভিযুক্তরা। অন্যদিক, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের তিনজন বিএনপি-র ছাত্র সংগঠন ছাত্র দলের নেতা। চতুর্থজন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশবাসীর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশের অম্তর্বর্তী সরকার এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব। দু’দিন আগেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনসে সেনা বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়। সেনার অফিসারেরা গ্রেফতারের নির্দেশ, প্রয়োজনে বিচারও করতে পারবেন। তারপর দেখা গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতে পারল তা নিয়ে সব মহলেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারও কারও মতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কখনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেনি।
জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় ধৃত ছাত্ররা।
দুই ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দেলনের নেতৃত্বও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্র লিগ নেতাকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় এক ছাত্র সমন্বয়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাতীয় নেতৃত্ব সাংগঠনিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তিন সমন্বয় নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম এবং হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে ঘটনার নিন্দা করেছেন মাত্র।
বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বড় অংশই হস্টেলে থাকে। ফলে ক্যাম্পাস বলতে গেলে সারা রাত খোলাই থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে একেবারে ছাত্রদের হস্টেলে। পিটিয়ে মারা হচ্ছে দেখেও কেউ কেন পুলিশে খবর দেয়নি সেই প্রশ্ন তুলে ঝড় বইছে সমাজমাধ্যমে। অনেকেই বলেছেন চোর সন্দেহে ভবঘুরে যুবককে যারা পিটিয়ে মারাতে হাত লাগায় তারা শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী গণ অভ্যত্থানে প্রথমসারিতে ছিল। সেই কারণে ভয়ে তাদের কেউ বাধা দিতে যায়নি। অন্যদিকে, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র লিগ নেতাকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক।