শেষ আপডেট: 19th November 2024 07:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহম্মদ ইউনুসের হুঁশিয়ারি উড়িয়ে এবার ফোনে ভাষণও দিলেন আওয়ামী লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা। হাসিনার ফোনে ভাষণের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়েছে সমাজ মাধ্যমে। সুইডেনে প্রবাসী আওয়ামী লিগ কর্মীদের এক জমায়েতে ভাষণ দিতে স্থানীয় এক নেতা হাসিনাকে ফোনে ধরেন। তিনি তাঁদের অনুমতি দেন, তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। তার কোনও আপত্তি নেই।
ভাষণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিশানা করেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস এবং বাকি উপদেষ্টাদের। বলেন, এঁরা সকলে গণহত্যাকারী। ৫ অগাস্টের পর বাংলাদেশে এঁরা গণহত্যা চালিয়েছে।
সোমবারই ঢাকার আদালতে হাসিনা-সহ আওয়ামী লিগের একাধিক সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এক মাসের মধ্যে হাসিনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। হাসিনা বিচার প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, ‘ইউনুসের গণহত্যার বিচার হবে।’
হাসিনার ফোনে এমন সময় ভাষণ দিলেন, যখন বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ্যেই তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্যকে উপকানিমূলক আখ্যা দিয়ে ভারত সরকারকে অনুরোধ করে যেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে চুপ থাকতে বলা হয়। ঢাকায় সাংবাদিক বৈঠক করে বাংলাদেশের জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক হাসান বলেন, সরকারের আপত্তির কথা ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জানানো হয়েছে।
হাসিনার কথায় স্পষ্ট মুখ বন্ধ রাখতে ভারত সরকার তাঁকে নিষেধ করেনি। ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রেও কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, ইউনুস বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরই দাগি বন্দিদের জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে। হাসিনার কথায়, ইউনুসের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ আছে।
হাসিনা ভাষণ দেওয়ার সময় সমাবেশ থেকে বারে বারে শ্রোতারা তাঁর নামে জয়ধ্বনী দেন। অনুষ্ঠান শেষে আওয়ামী লিগ নেত্রী সুভাষ ঘোষ, খোকন মজুমদার, লিংকন মোল্লা, মহম্মদ শহিদ, নঈম বাবু, খোকন মজুমদার, মহবুবুর রহমান, লিমন, কবির, সাব্বির প্রমুখ নাম নেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন। বলেন, শেয়ার মার্কেটের টাকা উধাও, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংকের টাকা উধাও। সেসব টাকা গেল কোথায়? ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমি রেখে আসছি। কোথায় গেল সেই খাদ্য।
তাঁর বক্তব্য, ‘শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছিল। গুলি করে দু’জনকে খুন করা হয়েছে। চাকরির বয়সসীমা কমানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার অফিসের সামনে জমায়েত করেছিল ছাত্ররা। তাদের পিটিয়ে তুলে দিয়েছে। একজন পড়ে মারা গিয়েছে। অথচ, আমার সময়ে আন্দোলনে কোনও বাধা ছিল না। কোটা আমিই বাতিল করে দিয়েছিলাম। তারপরও কোটা আন্দোলন শুরু হল। তারপর শুরু হল এক দফা। হাসিনার কথায়, ওদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে হত্যা করা। কী তাইত!’ হ্যাঁ, আপা (দিদি), হ্যাঁ আপা বলে উপস্থিত সকলে নেত্রীর কথায় গলা মেলান। হাসিনা তখন বলেন, ‘যে গণহত্যা চলছে তার বিচার হবে। বিচার আমি করবই, ইনশাল্লাহ।’