শেষ আপডেট: 30th September 2024 09:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দেশে দেশে ঘুরতে হচ্ছে। এই লজ্জা আর সইতে পারছি না।’ সম্প্রতি বলেছেন স্বয়ং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)-এর কাছ থেকে কড়া শর্তে ঋণ পেয়েছে পাকিস্তান। বিপুল পরিমাণ কর চাপিয়ে ঋণের টাকা শোধ দিতে হবে তাদের।
জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে পড়শি দেশের এই আর্থিক দুর্দশা নিয়ে সরব হয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ২০১৯ থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে। কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধার ৩৭০ অনুচ্ছেদ সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান ফের খড়্গহস্ত হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গ টেনে রাজনাথ বলেছেন, সম্পর্ক ভাল থাকলে পাকিস্তানকে আমরাই আইএমএফের থেকে বেশি টাকা ঋণ দিতে পারতাম।
রাজনাথ বলেন, ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার কাশ্মীরের জন্য বিশেষ উন্নয়ন প্যাকেজ ঘোষণা করে। সেই প্যাকেজের বর্তমান অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা আইএমএফের পাকিস্তানতে দেওয়া ঋণের থেকেও বেশি।
পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে একের পর এক রাষ্ট্রীয় কলকারখানা বিক্রি করে দিচ্ছে সে দেশের সরকার। আগামীকাল মঙ্গলবার পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস বা পিআইএ-কে নিলামে তোলা হবে। খরচ বাঁচাতে পাক মন্ত্রী-অফিসারদের বিদেশ সফরে লাগাম দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ইভেন্টের দায়িত্ব নিয়েও আর্থিক কারণে সরে দাঁড়াচ্ছে দেশটি।
প্রায় একই অবস্থা বাংলাদেশের। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে আর্থিক সহায়তা চাইছেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, কাশ্মীরের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজনাথ আসলে শুধু দেশের পশ্চিমপ্রান্ত নয়, পূর্বপ্রান্তের প্রতিবেশীকেও বার্তা দিয়েছেন। শাহবাজের মতো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসও বিভিন্ন দেশের কাছে ধার-অনুদান চেয়ে হাত পেতেছেন। বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি এতচাই খারাপ যে আগের ঋণ শোধ করতে পারছে না দেশটি। বিদ্যুৎ বাবদ ভারতের আদানি গ্রুপ মোটা টাকার বিলি ধরিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার টাকা মেটাতে পারছে না।
ওদিকে, রাশিয়া এবং চিনের ঋণের কিস্তিও বকেয়া পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার আগের চুক্তি অনুযায়ী অনুদানের অর্থ দিয়ে চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান শাসকদের নয়াদিল্লির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে বলে প্রধান উপদেষ্টার পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বক্তব্য নিয়ে অসন্তুষ্ট ভারত।
কূটনৈতিক মহল মনে করছে পাকিস্তানের আর্থিক দূরবস্থা নিয়ে সরব হয়ে বাংলাদেশকেও বার্তা দিয়েছেন রাজনাথ। সম্পর্ক ভাল হলে ভারত পরম বন্ধু হিসাবে পাশে থাকবে সে কথাও বলেছেন রাজনাথ।