শেষ আপডেট: 29th April 2024 11:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি প্রজ্জ্বল রেভান্নাকে বাড়িতে দেখলেই আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকতেন পরিচারিকারা। অভিযোগকারিণী এক পরিচারিকা পুলিশকে বলেছেন, মাস চারেক কাজে যোগ দেওয়ার পরেই রেভান্না তাঁকে ঘরে ডাকতেন। তাঁদের বাড়িতে মোট ৬ জন পরিচারিকা কাজ করতেন। তাঁরা প্রত্যেকেই বলেছেন, রেভান্না ঢুকলেই ভয়ে থাকতেন। কখন কার ডাক পড়ে কেউ জানতেন না।
হাসানের এমপি ও লোকসভা ভোটের প্রার্থী প্রজ্জ্বল অবশ্য ২৬ এপ্রিল ভোটের পরেই জার্মানিতে চলে গিয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁকে অবিলম্বে দল থেকে তাড়ানোর দাবি তুলেছেন বিধায়করা। প্রজ্জ্বলের কাকা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী বলেছেন, আমরা তদন্তের জন্য অপেক্ষা করব। যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তাহলে তাকে ক্ষমা করা হবে না। তিনি এও দাবি করেন, প্রজ্জ্বলকে প্রার্থী করার ব্যাপারে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু তাঁর বাবার দাবি ছিল, হাসান থেকে ও জিতে যাবে।
কর্নাটকের এক বিজেপি নেতার অভিযোগ, তিনি দলের রাজ্য সভাপতিকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তাঁর কাছে একটি পেন ড্রাইভে প্রায় ৩ হাজার মহিলার ভিডিও আসে। যার মধ্যে সরকারি চাকুরে মহিলাও আছেন। জনতা দল সেকুলারের সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না সেই সব ছবি দেখিয়ে মহিলাদের ব্ল্যাকমেল করে যৌন সম্পর্ক তৈরি করতেন।
হাসানের সাংসদ রেভান্নার বাড়ির পুরুষ কাজের লোকরাও পরিচারিকাদের সাবধান করে দিতেন কাজের আগে। ৩৩ বছরের যুবক রেভান্না চলতি লোকসভা ভোটেও হাসান থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র প্রার্থী হয়েছিলেন। ফলে, যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় আসরে নেমেছে বিজেপিও। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বাসবরাজ বোম্মাই বলেন, গোটা বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পিত। লোকসভা ভোটের মুখেই এটা ছড়ানো হচ্ছে দলকে কালিমালিপ্ত করতে।
বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যের মহিলারা কংগ্রেস জমানায় নিরাপদ বোধ করছেন না। বোম্মাই আরও বলেন, আমি শুনেছি, এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ভিডিও ভুয়ো। একই ধরনের কয়েকটি ভিডিও ছড়ানো চলছে। যদিও অভিযোগকারিণী পরিচারিকা পুলিশকে বলেছেন, শুধু প্রজ্জ্বল একা নন, তাঁর বাবা দেবগৌড়া-পুত্র এইচডি রেভান্নাও মহিলা কর্মীদের বাড়িতে যৌন সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করতেন।
তিনি বলেছেন, স্ত্রী বাড়িতে না থাকলেই দেবগৌড়ার প্রায় বৃদ্ধ ছেলে রাজ্যের বিধায়ক এইচ ডি দেবগৌড়া তাঁকে বাড়ির স্টোররুমে নিয়ে গিয়ে অস্থানে-কুস্থানে হাত দিতেন। শুধু তাঁকেই নয়, অন্যদের ক্ষেত্রেও একই কাজ করতেন। মহিলা বলেছেন, তাঁদের ফল খেতে দিয়ে শাড়ির আঁচলে লাগানো পিন খুলে দিতেন এইচডি রেভান্না।
ওই মহিলা পুলিশকে দেওয়া বয়ানে বলেছেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গেও অসদাচারণ করেছেন তিনি। একাধিক মহিলা রেভান্না ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তোলায় মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। কর্নাটকের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন নাগলক্ষ্মী চৌধুরি এই ঘটনাকে রাজ্যের বৃহত্তম যৌন কেলেঙ্কারি বলে বর্ণানা করেছেন।