পাক সেনা প্রধান।
শেষ আপডেট: 5 May 2025 20:55
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২২ এপ্রিল পাহেলগামে Kashmir, Pahalgam Incident) নৃশংস জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার আবহ ক্রমেই চড়ছে। ইতিমধ্যে একাধিক পদক্ষেপও করেছে ভারত। পাল্টা পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তানও। যার নিট ফল, দু'দেশের পারম্পরিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। প্রত্যাঘাতের দাবি জোরাল হচ্ছে।
এমন আবহে সোমবার বেলুচিস্তানের একটি অনুষ্ঠান থেকে পাকিস্তানের সেনা প্রধানের (Pakistan Army chief) হুঁশিয়ারি, "পাকিস্তান আঞ্চলিক শান্তি চায়, কিন্তু আত্মরক্ষা করতে দ্বিধা করবে না। ভারত হামলা করতে এলে পূর্ণ সামরিক শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া হবে।"
এর আগে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, "আমরাও পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। হিন্দুস্থান হামলা করলে পাকিস্তানও জবাব দিতে প্রস্তুত'।
অন্যদিকে সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল, পাকিস্তানিদের ভিসা ক্যান্সেল-সহ একাধিক পদক্ষেপের পাশাপাশি তিন বাহিনীকেও সক্রিয় করেছে ভারত। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে একাধিক পদক্ষেপ করেছে এবং করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। যা থেকে পর্যবেক্ষকদের একাংশের অভিমত, ভয় পেয়ে গিয়েই ফাঁকা আওযাজ দিচ্ছে পাকিস্তান। ভারত সরাসরি যুদ্ধের পথে হাঁটলে পাকিস্তান যে লড়তে পারবে না, তা বুঝেও প্রকাশ্যে নিজেদের শক্তি জাহির করার কৌশল নিয়েছে পাক সেনা।
বেলুচিস্তানের ওই অনুষ্ঠানে পাক সেনা প্রধানের দাবি, "পাকিস্তান এই অঞ্চলে এবং তার বাইরে শান্তি চায়। তবে যদি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করা হয়, পাকিস্তান তার জাতীয় মর্যাদা এবং তার জনগণের মঙ্গল রক্ষার জন্য পূর্ণ শক্তির সাথে প্রতিক্রিয়া জানাবে।" একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপেরও নিন্দা করেছেন সেনা প্রধান।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, জঙ্গি নিধনে যেভাবে কঠোর পদক্ষেপের পথে হাঁটছে ভারত তারই প্রতিফলন হিসেবে এদিন পাক সেনা প্রধানের মুখে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপেরও নিন্দা শোনা গেল। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এগুলি আসলে সবই কৌশল।
পহেলগামে জঙ্গিদের হামলায় ২৬ ভারতীয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ভারত সরকার আগেই প্রত্যাঘাতের কথা জানিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে নাকি জঙ্গি শিবির ভেঙে দিতে পাকিস্তানের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ভারত যে বসে নেই, ইতিমধ্যে তার একাধিক ছবিও সামনে এসেছে।
ইতিমধ্যে পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে ব্ল্যাক আউটের মক ড্রিল শুরু হয়েছে। সাধারণত যুদ্ধের সময়ে বা যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে 'ব্ল্যাকআউট' করা হয়। এলাকার সমস্ত আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে শত্রুপক্ষ বিমানহানা করতে না পারে। ঘরের আলো যাতে বাইরে থেকে দেখা না যায়, বাসিন্দাদের সে দিকে নজর রাখতে বলা হয়।
এরই পাশাাপাশি ৭ মে দেশের সব রাজ্যে সিভিল ডিভেন্সকে মক ড্রিল করানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সাধারণ নাগরিক, ছাত্রদের মক ড্রিল করাতে হবে। এয়ার রেড সাইরেনের এবং ব্ল্যাক আউটের জন্য প্রস্তুত থাকার কথাও বলা হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে পহেলগামে জঙ্গি হানার পর এদিন প্রথম লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে জরুরি বৈঠকে ডেকে পাঠান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্ধেবেলা পিএমওতে আসেন রাহুল। সেই বৈঠকে হাজির হন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও। সবমিলিয়ে প্রত্যাঘাতের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে বলেই মনে করা হচ্ছে।