সুপ্রিম কোর্ট
শেষ আপডেট: 12th January 2025 10:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্ত্রী যদি স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকতে অস্বীকারও করেন, তা সত্ত্বেও তিনি ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হতে পারেন। ভরণপোষণ পাওয়ার যথাযথ ও সঙ্গত কারণ থাকাটাই একমাত্র জরুরি, একসঙ্গে থাকা নয়। একটি নতুন মামলায় এমনই জানাল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court), ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পারিবারিক আদালতের আদেশ পুনর্বহাল করল। সেই আদালতে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল স্বামীকে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১ মে এক দম্পতির বিবাহ হয়, তবে ২০১৫ সালের অগস্ট তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। স্বামী দাবি করেন, স্ত্রী ২০১৫ সালের ২১ অগস্ট তাঁর বাড়ি ছেড়ে চলে যান এবং পরে আর ফিরে আসেননি। স্বামী পারিবারিক আদালতে আবেদন করেন একসঙ্গে থাকার আর্জি জানিয়ে।
স্ত্রী আদালতে জানান, তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে এবং ৫ লাখ টাকা পণ হিসেবেও দাবি করা হয়েছিল তাঁর কাছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল এবং ২০১৫ সালে তাঁর গর্ভপাত হলেও স্বামী তাঁকে দেখতে আসেননি।
স্ত্রী এ-ও জানান, তিনি ফিরে যেতে ইচ্ছুক, তবে শর্তসাপেক্ষে। তাঁকে বাড়ির শৌচাগার ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে এবং খাবার রান্নার জন্য কাঠের উনুন বা কয়লার উনুনের বদলে গ্যাস বা স্টোভের ব্যবহার করতে দিতে হবে।
২০২২ সালের ২৩ মার্চ পারিবারিক আদালত তাঁদের একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিলেও সে নির্দেশ স্ত্রী মানেননি। উল্টে তিনি ভরণপোষণের আবেদন করে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট রায় দেয়, স্ত্রী যেহেতু একসঙ্গে থাকার আদেশ মানেননি এবং সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করেননি, তাই তিনি ভরণপোষণ পাওয়ার যোগ্য নন।
এর পরেই এই রায়ের বিরুদ্ধে স্ত্রীর করা আপিল গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ সম্প্রতি বলেছে, ভরণপোষণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে কেসের নির্দিষ্ট পরিস্থিতির উপর। একসঙ্গে থাকা বা না থাকার উপর নয়।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'এই নিয়ে কোনও চূড়ান্ত নিয়ম প্রযোজ্য নয়, প্রতিটি মামলার পরিস্থিতি আলাদা, সেই মতো বিচার করতে হবে।' আদালত আরও জানায়, একসঙ্গে থাকার নির্দেশ ও তা অমান্য করা-- এই পরিস্থিতি স্ত্রীকে ভরণপোষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না।
এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের রায় বাতিল করে এবং পারিবারিক আদালতের ১০ হাজার টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার আদেশ পুনর্বহাল করে।আদালত জানায়, এই ভরণপোষণ ২০১৯ সালের ৩ অগস্টে করা আবেদন করার তারিখ থেকে প্রযোজ্য হবে। বকেয়া ভরণপোষণ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।