অক্ষয় কানোজিয়া।
শেষ আপডেট: 31st January 2025 08:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সইফ আলি খানের উপর ছুরি হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হয়েছিলেন অক্ষয় কানোজিয়া। একদিন পরেই নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে তিনি মুক্তি পান, তবে এই ঘটনার পর তার জীবন একেবারে ওলটপালট হয়ে গেছে। তিনি চাকরি হারিয়েছেন, তার বিয়ের কথা পাকাপাকি হলেও কনে পক্ষ সেই সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে তিনি ও তার পরিবার মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
১৮ জানুয়ারি মুম্বই থেকে কলকাতা যাওয়ার সময়ে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস থেকে রেলপুলিশ তাঁকে আটক করেছিল। বান্দ্রার ঘটনার পরে মুম্বই পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। পরেরদিন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হলেও, পুলিশের সন্দেহের কারণে তাঁর জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
পরে তদন্তে দেখা যায়, আসল অভিযুক্ত হলেন এক বাংলাদেশি নাগরিক। ৭০ ঘণ্টার অভিযান শেষে ৩০ জানুয়ারি ঠাণে জেলার হিরানন্দানি এস্টেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
অক্ষয় কানোজিয়া জানান, পুলিশের এই ভুল পদক্ষেপের ফলে তার জীবন পুরোপুরি বদলে গেছে। তিনি বলেন, 'আমি একজন সাধারণ গরিব মানুষ, তাই আমাকে এই দিন দেখতে হল। যদি আমি কোনও প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হতাম, তাহলে পুলিশ এমন আচরণ করত?'
তিনি আরও বলেন, 'আমি আমার চাকরি হারিয়েছি, আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল, কিন্তু এই ঘটনার পর কনের পরিবার বিয়ে ভেঙে দিয়েছে। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাই সম্পর্ক রাখতে ভয় পাচ্ছে। কেউ আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইছে না।'
অক্ষয়ের বাবা কৈলাশ কানোজিয়া পুলিশকে দায়ী করে বলেছেন, 'পরিচয় নিশ্চিত না করেই আমার ছেলেকে আটক করা হয়েছে। এই ভুল সিদ্ধান্ত ওর জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। মানসিক চাপের কারণে ও এখন কাজে মনোযোগ দিতে পারছে না, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গেও ঠিকমতো কথা বলছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ছেলের সঙ্গে আসল অভিযুক্তের কোনো মিল নেই। অথচ তার চাকরি চলে গেছে, বিয়ে ভেঙে গেছে। এর দায় কে নেবে?'
মুম্বই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, 'আমরা তদন্তের স্বার্থে কাউকে আটক করতেই পারি। আমরা প্রথম থেকেই বলছিলাম যে তিনি শুধুই সন্দেহভাজন ছিলেন, অভিযুক্ত নন। মিডিয়ার কিছু অংশ ভুল তথ্য ছড়িয়ে তাকে অপরাধী হিসেবে দেখিয়েছে।'
এই পরিস্থিতিতে অক্ষয় কানোজিয়া সরব হয়েছেন তাঁর সম্মান ফিরে পেতে। তিনি বলেন, 'আমি কোনও অপরাধ করিনি, তবু আমাকে এই অপমান সহ্য করতে হল। আমার ছবি যারা ভাইরাল করেছে, তারা তা সরিয়ে না নিলে আমি আদালতে যাব।'
এই ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নির্দোষ একজন সাধারণ নাগরিকের জীবন যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার দায় পুলিশি তদন্তের উপরেও বর্তায় বলে মনে করছেন অনেকেই। দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কারও পরিচয় পুলিশি হেফাজতের বাইরে যাওয়া ঠিক নয়।