শনিবার বিকালে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে (India-Pakistan ceasefire) রাজি হওয়ার খবর প্রথম বিশ্ববাসীকে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসনের তৎপরতায় দু’পক্ষকে রাজি করানো সম্ভব হয় বলে দাবি করেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদী-রাহুল গান্ধী
শেষ আপডেট: 12 May 2025 09:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংসদের বিশেষ অধিবেশন (special session of parliament) ডাকার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Prime minister Narendra Modi) চিঠি দিয়েছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Leader of the opposition in Rajya Sabha Mallikarjun Kharge) । একই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Leader of the opposition in Lok Sabha Rahul Gandhi)। কংগ্রেসের দুই নেতাই প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন ঠিক কী পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘর্ষ বিরতিতে ভারত রাজি হয়, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে তা বিশদে জানান।
শনিবার বিকালে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে (India-Pakistan ceasefire) রাজি হওয়ার খবর প্রথম বিশ্ববাসীকে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসনের তৎপরতায় দু’পক্ষকে রাজি করানো সম্ভব হয় বলে দাবি করেন তিনি। পরে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সও একই দাবি করেন। রবিবার আর এক কদম এগিয়ে ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতে চান।
কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছে, ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে মার্কিন প্রশাসন কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারল। কাশ্মীর সমস্যা নিয়েই বা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এত কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে কেন? কেন ভারত সরকার এই ব্যাপারে আপত্তির কথা প্রকাশ্যে জানাচ্ছে না?
খাড়্গে, রাহুলের পাশাপাশি এই ব্যাপারে সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি প্রমুখ। তাঁরা বলেন, সিমলা চুক্তি অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে দুই দেশ কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মানবে না। অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে ভারত সরকার নীরব। সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্তই বা কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলেন সে প্রশ্নও তুলেছে কংগ্রেস-সহ একাধিক দল। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ১৯৭১-এর যুদ্ধের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সংসদে সমস্ত বিষয় ব্যাখ্যা করেছিলেন। কীভাবে ঢাকায় যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা হয়, ভারতের তরফে কী কী শর্ত আরোপ করা হয় এ সবই জানানো হয় সংসদে। মোদী সরকারের উচিত উত্থাপিত প্রশ্নের জবাব দেওয়া। যদিও কংগ্রেস নেতা শশী তারুরের বক্তব্য, ১৯৭১-এর সঙ্গে ২০২৫-এর সংঘাতের মিল নেই। সেবার পুরোদস্তুর যুদ্ধ হয়েছিল।
কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, পাকিস্তানতে উপযুক্ত জবাব দিতে পহেলগামের ঘটনার পর থেকেই দল বলে আসছিল। কংগ্রেসের তরফে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলে দেওয়া হয়েছিল এই ব্যাপারে সরকারের সব ধরনের পদক্ষেপের পাশে থাকবে কংগ্রেস। এখন আচমকা সংঘর্ষ বিরতি নিয়েও দলের জবাব চাওয়ার অধিকার হয়েছে।
হাত শিবিরের সবচেয়ে বেশি আপত্তি মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে। কংগ্রেস নেতারা একান্তে জানাচ্ছেন, অতীতেও মার্কিন প্রশাসনের কর্তারা কাশ্মীর সংঘাত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চালিয়েছেন। তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ না মানার অবস্থানে অনড় থেকে ভারত সেই তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েছে। সেটা সম্ভব হয়েছে মার্কিন প্রশাসন সরকারিভাবে তাদের দৌত্যের কথা প্রকাশ না করায়। এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথম সংঘর্ষ বিরতির কথা জানানোয় প্রশ্ন উঠেছে ভারত তাকে নাক গলানোর সুযোগ দিল কেন। খাড়্গে ও রাহুলরা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে লেখা চিঠিতে এই প্রশ্ন তুলে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন।