শেষ আপডেট: 29th November 2023 11:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১৭ দিনের যুদ্ধ শেষ। জীবনযুদ্ধেও জয়ী হয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। অন্ধকার সুড়ঙ্গের বিভীষিকাময় দিনগুলোকে পিছনে ফেলে সূর্যের আলো দেখেছেন তাঁরা। উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের বাইরে অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু চলছে। এরপরে শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থা দেখে দেরাদুনের এইমস বা দিল্লির বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের। এই উদ্ধারকাজে ভারতীয় বায়ুসেনার চিনুক কপ্টারেই ভরসা রাখা হয়েছে। বিপদসঙ্কুল পাহাড় আর ক্ষণে ক্ষণে বদলে যাওয়া আবহাওয়ার সঙ্গে যুঝতে টুইন রোটর হেভি লিফ্ট চিনুক হেলিকপ্টারই প্রস্তুত রাখা হয়েছে এয়ারস্ট্রিপে।
কেন উদ্ধারকাজে চিনুক কপ্টারই ভরসা সেনা, এমআই-১৭ নয়?
শ্রমিকদের এয়ারলিফ্ট করে নিয়ে যাওয়ার জন্য সি-১৭, এএন-৩২ ও সি-১৩০ জে কপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চিনুকের নির্মাণকারী সংস্থা বোয়িং জানিয়েছে, অনেক উচ্চতায় উড়তে পারে চিনুক। এই কপ্টার হেভি পে-লোড লিফ্টার, অর্থাৎ অনেক বেশি ভার বহন করে নিয়ে যেতে পারে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাদের জন্য অস্ত্রশস্ত্র, রেশন পৌঁছে দিতে তাই চিনুক কপ্টারেই ভরসা রাখা হয়।
বায়ুসেনার চিনুক কপ্টারে থাকে মাল্টি-ফাংশন ডিসপ্লে, মুভিং ম্যাপ ডিসপ্লে, ডিজিটাল মোডেম, ডিজিটাল ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম। দিনে ও রাতের যে কোনও সময় কাজ করতে পারে চিনুক। এর ককপিটে রয়েছে মাল্টি-ফাংশন লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে, ইলেকট্রনিক ফ্লাইট ইনস্ট্রুমেন্ট ও ANVIS-7 নাইট-ভিশন ক্যাপাসিটি। চিনা ফৌজ যখন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান নদী উপত্যকা, গোগরা হট স্প্রিং, প্যাঙ্গং লেকের উত্তরে পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকা দখল করে রেখেছিল, তখন দিনে-রাতে চিনা ফৌজের উপর নজরদারি চালাতে ও ভারতীয় বাহিনীর কাছে দুর্গম পাহাড়ি খাঁজে রসদ ও অস্ত্র পৌঁছে দিতে এই চিনুক কপ্টারকেই কাজে লাগানো হয়েছিল।
বিশাল আকারের এই কপ্টারগুলি সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে। পাহাড়ি এলাকায় যদি আবহাওয়ার অবস্থা বদলে যায় তাহলেও চিনুক কপ্টার নিরাপদেই উদ্ধারকাজ সারতে পারবে। সেনা সূত্র জানাচ্ছে, চিনুক হেলিকপ্টারে একবারে ৪৪-৪৫ জনকে বহন করা যায়। সর্বোচ্চ ২৪টি স্ট্রেচার ধরে চিনুকের ভিতরে। সেখানে এমআই-১৭ কপ্টারে ২৫ জনকে এয়ারলিফ্ট করা যায়। সেক্ষেত্রে এমআই-১৭ ব্যবহার করলে শ্রমিকদের দেহরাদূন বা দিল্লির হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক বেশি সময় লাগবে। অনেকগুলো ট্রিপ দিতে হবে।
চিনুককে বলা হয় হেভি ডিউটি মাল্টি মিশন ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টার’। এক লপ্তে অন্তত ৪৫ জন সেনা জওয়ান এবং ১১ টন বা ১১০ কুইন্টাল ওজন পেটের মধ্যে নিয়ে উড়ে যেতে পারে এই হেলিকপ্টারগুলি। এছাড়া নীচে ঝুলিয়ে আরও ১০০ কুইন্টাল ভারী জিনিস বহন করতে পারে চিনুক। তাই শ্রমিকদের উদ্ধারকাজে এই কপ্টারেই বেশি ভরসা রাখছে ভারতীয় সেনা।