শেষ আপডেট: 25th October 2024 18:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জীবনের বেশিরভাগ সময় একাই কাটিয়েছেন। বিয়ে করেন নি, তাই সেই অর্থে নিজের বলতে কেউ ছিল না। বয়স যত বেড়েছে কাছের বলতে হাতে গোনা কয়েকজন ছিলেন। মৃত্যুর আগে তাঁদের জন্যই সবকিছু দিয়ে গেলেন সদ্য প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটা।
বিশিষ্ট শিল্পপতির মৃত্যুর পর এবার সামনে এল তাঁর উইল। আর তাতেই আরও একবার প্রমাণ হল কেন তিনি সকলের প্রিয়। জানা গিয়েছে, রতন টাটা তাঁর ব্যক্তিগত উইলে পোষ্য টিটোর নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন। সম্পত্তির অংশ ভাগ দিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের রাঁধুনি ও পরিচারকদের। বাদ যায়নি সাধের পোষ্য টিটো, শেষ বয়সের ছায়াসঙ্গী, প্রিয় বন্ধু শান্তনু নাইডুও।
টিটোকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। চলে যাওয়ার পর, টিটোর যত্নের যাতে কোনওরকম ত্রুটি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই উইলে বিশেষ ব্যবস্থা করে গিয়েছেন রতন টাটা। ভারতে সম্ভবত এই প্রথম, কোনও শিল্পপতি নিজের পোষ্যের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিলেন।
গত ৯ অক্টোবর ৮৬ বছর বসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রতন টাটা। তাঁর মৃত্যুর পর টাটা সাম্রাজ্যের পাশাপাশি রতন টাটার বিপুল সম্পত্তির মালিক কে হবেন, তা নিয়েও অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল। এবার উইল সামনে আসতেই জানা গেল কার জন্য কী রেখে গিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, রতন টাটার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
যে উইল তিনি তৈরি করে গিয়েছেন, তাতে লেখা আছে তাঁর প্রিয় পোষ্য টিটোর যেন যত্নের কোনও অভাব না হয়। রতন টাটার পোষ্য জার্মান শেফার্ডটি যতদিন বাঁচবে, তার সবরকমের সেবা-যত্নের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ছ’বছরেরও বেশি সময় টিটোর সঙ্গে কাটিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও যারা দীর্ঘদিন ধরে তাঁর খেয়াল রেখেছিলেন, তাঁদেরও ভোলেননি রতন টাটা। নিজের উইলে সম্পত্তির একটি অংশ লিখে দিয়েছেন রাঁধুনি রজন সাউয়ের নামে। তিন দশক ধরে তাঁর পরিচারক ছিলেন সুব্বিয়া। তাঁর নামও উইলে লিখে গিয়েছেন রতন টাটা। পরিবারের মধ্যে নিজের ভাই বলতে ছিলেন জিমি টাটা। তাঁর জন্য যেমন সম্পত্তির একটি অংশ লিখে দিয়েছেন তেমনই দুই সৎ বোন শিরিন ও ডিয়ানার জন্যও সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। বাকি সম্পত্তি তিনি টাটা ফাউন্ডেশনের নামে লিখে দিয়েছেন।
মুম্বইয়ের জুহু রোডে দোতলা একটি বাড়ি এবং আলিবাগে ২০০০ স্কোয়ারফুটের একটি বাংলো ছিল রতন টাটার। ব্যাঙ্কে ৩৫০ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ছিল তাঁর। ১৬৫ বিলিয়ন ডলারের টাটা গ্রুপে মূল সংস্থা টাটা সন্সের ০.৮৩ শতাংশ অংশীদারিত্বও ছিল রতন টাটার নামে।
টাটা সন্সে রতন টাটার যে অংশীদারিত্ব ছিল, তা রতন টাটা এনডাওমেন্ট ফাউন্ডেশনে হস্তান্তর করা হবে। টাটা গ্রুপের সংস্থাগুলিতেও রতন টাটার যে শেয়ার ছিল, তাও এই ট্রাস্টেই হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
তবে তাঁর ২০-৩০টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং কোলাবায় যে বিশাল বাংলো আছে সেগুলি কাকে দেওয়া হবে তা জানা যায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, গাড়িগুলি পুণে মিউজিয়ামে পাঠানো হতে পারে বা নিলাম করে দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বম্বে হাইকোর্ট।