শেষ আপডেট: 21st January 2025 17:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রামচন্দ্র রেড্ডি, আপ্পারাও, রামু… তাঁর ছদ্মনাম অন্তহীন। ভালো নাম একটা ছিল—জয়রাম রেড্ডি। তবে লোকমুখে, মওবাদী দুনিয়ায় ও পুলিশি মহলে লোকে তাঁকে একডাকে চিনত ‘চলপতি’ নামেই। ছত্তীসগড়-ওড়িশা সীমান্তের গারিয়াবান্দ জেলায় কাল রাত থেকে শুরু হওয়া পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা গেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই জওয়ানদের নিশানায় ছিলেন চলপতি। যার মাথার দাম ধার্য হয়েছিল এক কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়রাম রেড্ডি ওরফে চলপতির জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুরে। ক্লাস টেন পর্যন্ত লেখাপড়া। তারপর প্রথাগত শিক্ষাদীক্ষায় ইতি। যদিও পুথিগত বিদ্যার ঘাটতির কারণে তাঁর মাওবাদী মহলে সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠায় বেগ পেতে হয়নি। সংগঠনের নীতি নির্ধারক কমিটির ক্যাডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করেছিলেন চলপতি।
পুলিশ সূত্রে খবর, অল্পদিনেই বস্তারের ঘন জঙ্গলকে নিজের উপনিবেশে পরিণত করেছিলেন এই মৃত মাওবাদী নেতা। অরণ্যের আনাচ-কানাচ হাতের তালুর মতো চিনতেন। যে কারণে দলে প্রভাব-প্রতিপত্তি ক্রমশ বাড়তে থাকে।
শোনা যায়, তিনি একাকী খুব একটা ঘোরাফেরা করতেন না। সব সময় আট-দশজন নিরাপত্তারক্ষী ছায়ার মতো অনুসরণ করত। একে-৪৭ থেকে শুরু করে এসএলআর রাইফেল—অস্ত্র পরিচালনাতেও তলপতির ছিল জুড়ি মেলা ভার। যে কারণে, কৌশলগত দক্ষতা, নেতৃত্বদানের ক্ষমতা এবং দুর্গম অঞ্চলে অনুগামীদের পরিচালনার দৌলতে তলপতি মাওবাদীর গোষ্ঠীর প্রথম সারির নেতা হয়ে ওঠেন। গত বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁর ঘোরাফেরার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। ক’দিন আগে পুলিশের কাছে খবর আসে, তিনি গারিয়াবান্দ-ওড়িশা সীমান্তে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। আর ওখানেই রয়েছে তলপতির আদত ঘাঁটি।
এই খবর পাওয়া মাত্র সিআরপিএফ, কোবরা কমান্ডো, ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী ছত্তীসগড়-ওড়িশা সীমান্ত এলাকার মৈনপুর থানা এলাকায় তল্লাশি চালায়। ওই জঙ্গল মহলে সোমবার রাত থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলে। এই সংঘর্ষে মাওবাদী নিকেশ গঠিত বিশেষ কোবরা বাহিনীর এক কমান্ডার আহত হন। অন্যদিকে প্রাণ হারান ১৯ জন মাওবাদী জঙ্গি। এই তালিকারই একটি নাম জয়রাম রেড্ডি ওরফে ‘চলপতি’।