অপারেশন সিঁদুর ও তার পরবর্তী ভারত-পাকিস্তানের এত বড় যুদ্ধের শেষে একটাই প্রশ্ন উঠে আসছে, পহলগামের রিসর্টে ২৬ জনের গণহত্যার চার-পাঁচ বা ছয় ঘাতকের কী হল?
নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 13 May 2025 13:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাম-রাবণের যুদ্ধও শেষ হয়েছিল, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধও থেমেছিল। সবকিছুর পিছনে ছিল সেই মোক্ষম বাণী...বিনাশয় চ দুষ্কৃতম। কিন্তু, অপারেশন সিঁদুর ও তার পরবর্তী ভারত-পাকিস্তানের এত বড় যুদ্ধের শেষে একটাই প্রশ্ন উঠে আসছে, পহলগামের রিসর্টে ২৬ জনের গণহত্যার চার-পাঁচ বা ছয় ঘাতকের কী হল? সরকারি দাবি সময় অনুসারে বিভিন্ন সময় বদলেছে জঙ্গির সংখ্যা। তবে অনুমিত যে, তার মধ্যে ২ জন ছিল পাকিস্তানি লস্কর-ই-তোইবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের পাক জঙ্গি। এবং দুজন হল পাক প্রশিক্ষিত কাশ্মীরি। কিন্তু, ২২ এপ্রিলের গণহত্যার পর থেকে এ পর্যন্ত সেই চারজনের বিষয়ে কোনও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সামনে আসেনি। যার ভিত্তিতে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘর্ষ পরমাণু যুদ্ধের দিকেও গড়াতে পারত।
ঘটনাক্রম বলছে, পহলগাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার জঙ্গিকে শনাক্ত করেছিল ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। চারজনের ছবিও প্রকাশ করে পরিচয় জানানো হয়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, চার জঙ্গি হল— আদিল, আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা! এত বড় অপারেশনের পরও তাদের সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা নেই। অপারেশনের আগে-পরে তাদের খতম করে দেওয়া হয়েছে? অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা যে ৯টি জঙ্গি সংগঠনের বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে, সেখানে কি তারা লুকিয়ে ছিল? তারা এখনও কাশ্মীরেই লুকিয়ে রয়েছে, নাকি তারা পাকিস্তানে অথবা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কোনও ডেরায় ঘাপটি মেরে আছে!
অপারেশন সিঁদুর ও পরবর্তী যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সরকার প্রতিদিন সাংবাদিক বৈঠক করেছে। কিন্তু কোথাও পহলগাম কাণ্ডের জঙ্গিদের প্রসঙ্গে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি। দেশের মানুষের কাছে এখনও স্পষ্ট নয় যে, এই চার জঙ্গি এখন কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছে? গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছয় জন। সকলের মুখে ছিল মাস্ক। হাতে একে ৪৭-এর মতো বন্দুক। আচমকাই পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে।
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির আবহে জন্ম হয় জঙ্গি গোষ্ঠী টিআরএফের। গোয়েন্দা সূত্রে খবর ছিল, হামলার মূল চক্রী সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি। সে লস্করের অন্যতম প্রধান। এছাড়াও, এই জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্যতম মাথা তথা ভরতের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত সইফুল্লা। জঙ্গিরা সকলেই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। ঘটনার দিন কয়েক আগেই ভারতে আসে তারা। এমনকী এলাকা পরিদর্শনও করে যায়।
অপারেশন সিঁদুরের এত বড় সাফল্যে লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ ও জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে নিকেশ করা যায়নি। তবে তাদের পরিবারের অনেকে ভারতের অভিযানে খতম হয়েছে বলে সরকারের দাবি। কিন্তু, এত বড় জয়ের আনন্দে দিশাহারা ভারতবাসী এটাও জানতে উদগ্রীব যে, মূল ঘাতকবাহিনীর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নিতে পারা গিয়েছে?