Date : 15th Jun, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
SSC: চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের অনশনের দ্বিতীয় দিন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে এল মেডিকেল টিমঅসুস্থ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ারে চলছে চিকিৎসাপ্রযোজককে অপহরণ! অভিনেত্রী পূজার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ শ্যামসুন্দরেরসমুদ্রে মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তায় বড় পদক্ষেপ রাজ্যের, বসানো হচ্ছে ইসরোর নতুন যন্ত্রনিহতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা সাহায্য এয়ার ইন্ডিয়ার, ক্ষতিপূরণ পাবেন একমাত্র জীবিত যাত্রীওকাশ্মীরে ধাপে ধাপে খুলছে ১৬টি পর্যটন কেন্দ্র, পহেলগামকাণ্ডের পর সবুজ সংকেত পর্যটকদেরত্বকের নানা সমস্যায় মুশকিল আসান হতে পারে 'কেমিক্যাল পিল', তবে কিছু জিনিস না জানলেই নয়ডিএনএ মিলেছে ৯ জনের, বিমান দুর্ঘটনার পর প্রথম দেহ তুলে দেওয়া হল পরিবারের হাতেবিলাসবহুল এসি গাড়ি ভাড়া করে ছাগল চুরি ! চোরের কীর্তি দেখে অবাক পুলিশ কর্তারাNEET Result : উচ্চ-মাধ্যমিকে প্রথম বর্ধমানের রূপায়ণের নজরকাড়া ফল নিটেও, দেশে কুড়িতম স্থান
Jawaharlal Nehru visited Pahalgam

স্বর্গছেঁড়া পহলগামেই শেষ ছুটি কাটিয়েছিলেন নেহরু, সঙ্গী ইন্দিরা, সঞ্জয় ও রাজীব গান্ধী

১০ দিনের কাশ্মীরে ছুটি কাটাতে যাওয়াই 'কাশ্মীরি পণ্ডিত' নেহরুর শেষ বেড়াতে যাওয়া।

স্বর্গছেঁড়া পহলগামেই শেষ ছুটি কাটিয়েছিলেন নেহরু, সঙ্গী ইন্দিরা, সঞ্জয় ও রাজীব গান্ধী

নেহরু ১৯৬৩ সালে ১৮ জুন সকালে এসে পৌঁছন শ্রীনগরে।

শেষ আপডেট: 20 May 2025 13:49

দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাশ্মীর তখন পটে আঁকা ছবির মতো সুন্দর ছিল। পৃথিবীর বুকে একটুকরো স্বর্গ ছিঁড়ে এনে রেখে দিয়েছিল যেন কেউ। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু যাবেন সেই স্বর্গছেঁড়া ভূস্বর্গে। ভগ্নস্বাস্থ্য উদ্ধারে। সঙ্গে থাকবেন মেয়ে ইন্দিরা 'প্রিয়দর্শিনী' গান্ধী। তাঁর দুই ছেলে রাজীব ও সঞ্জয়। বড়জনের বয়স তখন ১৮ বছর, ছোটটি ১৬ বছরের কিশোর।

সেবারের ১০ দিনের কাশ্মীরে ছুটি কাটাতে যাওয়াই 'কাশ্মীরি পণ্ডিত' নেহরুর শেষ বেড়াতে যাওয়া। তার ১১ মাস পরেই অসুস্থতার কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। কাশ্মীরের ছুটিতে ডাল লেকে শিকারায় ভ্রমণ ছাড়াও এই পহলগামেও গিয়েছিলেন নেহরু-ইন্দিরা পরিবার। যেখানে পাক জঙ্গিরা ঢুকে গত ২২ এপ্রিল ধর্ম বেছে বেছে ২৬ জনকে খুন করে। নেহরুর দেখা সেই কাশ্মীরের সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতিতে কত বদল হয়ে গিয়েছে!

১৯৪৩ সালে লেখা কাশ্মীর: দ্য প্লেগ্রাউন্ড অফ এশিয়া (Kashmir: The Playground of Asia) বইতে সচ্চিদানন্দ সিনহার লেখা বলছে, পহলগাম তখন থেকেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় ভ্রমণকেন্দ্র ছিল। স্বাধীনতার আগে থেকেই পহলগামে যাওয়ার গাড়িরাস্তা ছিল। যে কারণে ইউরোপীয় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মিনি সুইৎজারল্যান্ড। তাঁর লেখাতেই শ্বেতশুভ্র পাহাড়, সবুজ বনানী, চিনার-পাইনে মোড়া তরাই, পরিবহণ সুবিধা, নিভৃত বনবাস, শখের মাছ ধরা ও পরম শান্তির অবকাশ কাটানোর সেরা স্থান।

সচ্চিদানন্দের বইতে বৈসরনের কথারও উল্লেখ রয়েছে। পহলগাম থেকে ২ মাইলের ট্রেকিং করে পাইন বন পেরিয়ে যাওয়া যায় সেখানে। ঘোড়াও যেত সেই আমলেও। এই বৈসরনেই পাক জঙ্গি মদতে হামলা হয়েছিল। নেহরু ১৯৬৩ সালের জুন মাসে কাশ্মীরে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন এক প্রচণ্ড উত্থানপতনের রাজনীতির আবর্তনে। তাঁর শরীর ক্রমশ ভেঙে পড়ছিল, চিনের সঙ্গে যুদ্ধে (১৯৬২) সবেমাত্র পরাজয়ে কংগ্রেস সরকারের উপর বিদ্রোহ, অসন্তোষ মাথাচাড়া দিচ্ছে। সেই সময় মন ও শরীর দুইই ভেঙে পড়েছিল নেহরুর।

নেহরু ১৯৬৩ সালে ১৮ জুন সকালে এসে পৌঁছন শ্রীনগরে। তাঁরা উঠেছিলেন চশমে শাহি গেস্ট হাউসে। সকালে পৌঁছেই গেস্ট হাউসে বসে প্রধানমন্ত্রী চায়ের নিমন্ত্রণে কথা বলেন রাজ্যে মন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও বিধান পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে। শ্রীনগরে নেহরু ন্যাশনাল কনফারেন্সের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশেও ভাষণ দেন। বলেন, চিনের সঙ্গে আঁতাঁত গড়ে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান কোনওদিন লাভবান হবে না।

শ্রীনগর থেকে ৯০ কিমি দূরে পহলগামে যান নেহরু-ইন্দিরা। সেখানে গিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটান। তারমধ্যেও ২১ জুন নেহরু তৎকালীন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি নীলম সঞ্জীব রেড্ডিকে চিঠি লেখেন। পহলগামেই ২৪ জুন তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করেন তৎকালীন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী বিজু পট্টনায়ক। ২৬ জুন নেহরুরা বেড়াতে যান আরু উপত্যকায়। পহলগাম থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে। তিনি ঘুরে দেখেন কোলাহোই হিমবাহ, লিডার নদীর উৎসস্থল।

২৮ জুন নেহরু ফিরে আসেন রাজধানী দিল্লিতে। শ্রীনগরে তাঁকে বিদায় জানাতে এসেছিলেন সদর-ই-রিয়াসত করণ সিং ও জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী বকশি গুলাম মহম্মদ। দিল্লিতে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মোরারজি দেশাই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী প্রমুখ। নামে ছুটি কাটানো হলেও নেহরুর অবর্তমানে দিল্লির রাজনীতি আরও জটিল হয়ে পড়ে এবং তিনি ফিরে আসা মাত্র আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকে কংগ্রেসের অন্তর্কলহ।

নেহরু কাশ্মীরে থাকাকালীনই তাঁর মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী ইস্তফা দেন। তা নিয়ে পালাম বিমানবন্দরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ১৯৬২ সালে বিপুল ভোটে জিতে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেও চিন যুদ্ধের পরাজয় নেহরুকে রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেয়। ১৯৬৩ সালে তাঁর সরকা প্রথমবারের জন্য অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হয়। যা এনেছিলেন গান্ধীবাদী নেতা প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি জেবি কৃপালনী।

১৯৬৪ সালের জানুয়ারি থেকেই পণ্ডিত নেহরুর স্বাস্থ্য আরও ভেঙে পড়তে থাকে। ভুবনেশ্বরে কংগ্রেস অধিবেশন চলাকালীন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি এবং ২৭ মে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


ভিডিও স্টোরি