শেষ আপডেট: 30th July 2024 10:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেরলের ওয়ানাড় জেলার কালপাট্টার চুরুমালা বাজার প্রায় ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার ভোররাতের বৃষ্টির জলের তোড়ে পাহাড়ি এলাকার মাটি ধসে পড়তে থাকে। প্রবল বেগে হড়পা বানের পরিস্থিতি যখন তৈরি হয়, তখনও মানুষজন পালিয়ে বাঁচার অবকাশটুকু পাননি। বেলার দিকে এলাকা গিয়ে দেখা গিয়েছে, জল-কাদামাটির উপর দাঁড়িয়ে মানুষজন অঝোরে কেঁদে চলেছেন।
স্থানীয় মনোরমা সংবাদমাধ্যম ঘটনাস্থলের বিবরণ দিয়ে জানিয়েছে, বাড়ির মহিলারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। জলের মধ্যে থেকে তাঁরা কাতর স্বরে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করে চলেছেন। এমনকী কাদার মধ্যে চাপা পড়া অবস্থাতেই কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। তাঁরা বলছেন, কেউ এসে বাঁচান। আমাদের শ্বাস আটকে আসছে। কাদার নীচে তলিয়ে যাচ্ছি আমরা।
স্থানীয় এক গৃহবধূ জানালেন, তাঁর স্বামী ও মেয়ে চুরুমালা শহরের ঘরের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন। কাদামাটি গলা পেরিয়ে যাচ্ছে। জানি না, এখনও কেউ বেঁচে আছে কিনা। এঁদের অনেকেই সারারাত ধরে কী তাণ্ডব চালিয়েছে প্রকৃতি। যখন ঘুম ভেঙেছে, তখন সব শেষ।
রাত আড়াইটে নাগাদ এলাকার লোকজন টের পান ভূমিধসে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর। যাঁরা সেই মুহূর্তে ছুটে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন তাঁরা কোনওরকমে সেই সময়ের জন্য রেহাই পেলেও জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন তাঁদের অনেকেই। দিনের আলো ফোটার পর জানা গিয়েছে, চুরাল মালা অঙ্গাড়ি পুরো মাটির তলায়। বৃষ্টির তোড়ে পাহাড়ি নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে ঢুকে পড়ে গ্রাম-শহরে। স্থানীয় স্কুলের অর্ধেক এখন জলের তলায়।
এখনও পর্যন্ত মুন্ডাকাইয়ের অবস্থা সম্পর্কে কোনও খোঁজই পাওয়া যায়নি। একটি সেতু ভেঙে পড়ায় ওই এলাকা এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অস্থায়ী একটি সেতু নির্মাণের চেষ্টা চললেও জলের তোড়ে এবং কাদার কারণে তা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
কেরলে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪। শতাধিক নিখোঁজ এবং কাদামাটির নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সহ দেশের তাবড় নেতারা এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং জখমদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে।