শেষ আপডেট: 2nd August 2024 13:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেরলে প্রায় নিশ্চিহ্ন ওয়ানাড় জেলার একাংশে যখন প্রতি মিনিটে মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে, তখন সেই ধসপীড়িত এলাকায় ঝাঁসির রানির মতো লড়ে চলেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর সীতা শেলকে। চুরালমালা ও মুন্ডাক্কাইয়ের মধ্যে বেইলি ব্রিজ গড়ে তোলা ইঞ্জিনিয়ারিং দলের একমাত্র মহিলা সদস্য সীতা। যাঁকে নিয়ে দুর্দশাপীড়িত কেরলের ছবি দেখে শিউরে ওঠা নেটদুনিয়াতেও আনন্দোচ্ছ্বাসের ঢেউ উঠেছে।
মহারাষ্ট্রের এই মহিলা মেজর সীতার এর আগেও দ্রুত বেইলি ব্রিজের মতো উদ্ধারকারী সেতু তৈরির বহু অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলের কেরল ও কর্নাটক সাব এলাকার জিওসি মেজর জেনারেল ভিটি ম্যাথু বেঙ্গালুরু থেকে চুরালমালা গিয়ে এই ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের নেতৃত্ব দেন। তাঁকে সহায়তা করেন স্থানীয় ভূমিপুত্র আলাপ্পুঝার বাসিন্দা মেজর আশিস মোহন। বেইলি ব্রিজটি তৈরি করেছে মাদ্রাজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ। কিন্তু মহিলা বলতে একাই ছিলেন সীতা শেলকে।
তারপর থেকেই নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে মারাঠি সীতা। সেতু নির্মাণের সময় বিজয়ীর ভঙ্গিমায় তাঁর কাজ করার দৃশ্য হু-হু করে ছড়িয়ে পড়ছে। আর বাহবা বা প্রশংসায় শতমুখ হচ্ছেন নেটপাড়ার বাসিন্দারা। সীতার জন্ম মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার পারনের তালুকের গড়িলগাও নামে এক অজ পাড়াগাঁয়ে। ছোট্ট সেই গ্রামে মাত্র ৬০০ মানুষের বাস।
চার ভাইবোনের একজন সীতা। সীতার বাবা একজন আইনজীবী। আহমেদনগরের একটি গ্রামীণ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন সীতা। তাঁর প্রাথমিক ইচ্ছা ছিল আইপিএস অফিসার হওয়া। কিন্তু, যোগ্য প্রশিক্ষণের অভাবে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার লক্ষ্য তৈরি করেন। কিন্তু, এসএসবি-র পরীক্ষায় পরপর দুবার পাশ করতে না পরেও তৃতীয়বার সফলভাবে উত্তীর্ণ হন এবং ২০১২ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
মহারাষ্ট্রের এক অনামা গ্রাম থেকে উঠে এসে প্রায় বিধ্বস্ত ও প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে একটানা লড়াই করে তিনি ১৯০ ফুট দীর্ঘ বেইলি ব্রিজ নির্মাণে অসামান্য কাজ করেছেন। সীতার সঙ্গে কাজ করা জওয়ান ও ইঞ্জিনিয়ারদের সাফল্যেই চুরালমালা ও মুন্ডেক্কাইয়ের মধ্যে ত্রাণ ও খাবার নিয়ে যাওয়া ট্রাক চলাচল করতে পারছে। কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমে সীতা সহ সেনাবাহিনীর কর্মীরা যে কাজ করেছেন তাকে কুর্নিশ করছেন সকলেই।