শেষ আপডেট: 11th April 2025 08:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টানটান গোয়েন্দা কাহিনিকেও হার মানানো এক নাটকীয় ঘটনা ঘটালেন তরুণী। উত্তরপ্রদেশের বরেলির একটি ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, একজন পুরুষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের শরীরে অস্ত্রোপচার করে বুলেট ঢুকিয়ে দিয়েছেন ওই তরুণী। ভুয়ো ধর্ষণ ও গুলির ওই মামলায় পুলিশি তদন্তে চমকে ওঠার মতো সব তথ্য সামনে এসেছে।
ঘটনাটি ঘটে ২৯ মার্চ রাতে। বরেলি শহরের পুলিশপ্রধান জানান, সেদিন রাতে গান্ধী উদ্যানের কাছে এক মহিলাকে গুলি করা হয়েছে বলে খবর আসে থানায়। পরদিন সকালে ওই মহিলার ভাগ্নি অভিযোগ জানায়, তার মাসি একটি দোকান থেকে ওষুধ কিনে বেরোনোর সময়ে একটি কালো গাড়িতে থাকা পাঁচ জন ব্যক্তি তাঁকে অপহরণ করে। এরপর তাঁকে ধর্ষণ করে, গুলি করে গান্ধী উদ্যানে ফেলে দিয়ে যায় তারা।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা শহরের পুলিশ তদন্ত শুরু করে। কিন্তু মেডিক্যাল রিপোর্ট আসতেই পুরো ঘটনা মোড় নেয় অন্য দিকে। রিপোর্টে পরিষ্কার জানানো হয়, মহিলার শরীরে যে বুলেট পাওয়া গেছে তা কোনও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা ছোড়া হয়নি। সেটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শরীরে ঢোকানো হয়েছে এবং সেই অস্ত্রোপচারের চিহ্ন এখনও স্পষ্টভাবে রয়ে গেছে।
এরপর তদন্ত এগিয়ে যেতে, পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। দেখা যায়, যে সময় মহিলার অপহরণের কথা বলা হয়েছিল, সেই সময় তিনি একটি অটোতে করে স্বাভাবিকভাবেই যাচ্ছিলেন। কোনও অপহরণের চিহ্নই মেলেনি।
শেষে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মহিলা স্বীকার করে নেন, তিনি এর আগেও একজন জনপ্রতিনিধি ও তাঁর ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করেছিলেন। সেই মামলার রায় শীঘ্রই আসতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে সেই পরিবারকে আবার চাপে রাখার উদ্দেশেই তিনি এই কাহিনি তৈরি করেন।
তদন্তে জানা যায়, মহিলার ষড়যন্ত্রে সাহায্য করে জেলা হাসপাতালের এক কর্মী ও এক ভুয়ো চিকিৎসক। তাঁরাই অস্ত্রোপচার করে মহিলার শরীরে বুলেট ঢোকায়। এরপর গুলির চিহ্ন ফুটিয়ে তুলতে তিনি গরম কয়েন দিয়ে শরীরের সেই অংশ দগ্ধ করে দেন, যেন আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ছোড়া গুলির বার্ন মনে হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় কমপক্ষে তিনজন জড়িত। এর মধ্যে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, আরও বেশ কিছু মানুষ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এবং তদন্ত সেই দিকেই এগোচ্ছে।