বেশকিছু কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় ইসলামাবাদ প্রশাসনকে।
শেষ আপডেট: 6 May 2025 11:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পহলগামে জঙ্গি হানা পরবর্তী উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পরমাণু অস্ত্র-শক্তিধর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আবহ তৈরি হওয়ায় উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সোমবার দুপুরে (ভারতীয় সময় মঙ্গলবার ভোর) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে তুলোধনা করা হয়েছে পাকিস্তানকে। নিরাপত্তা পরিষদের মুখের সামনে বেশকিছু কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় ইসলামাবাদ প্রশাসনকে। যে প্রশ্নের বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য জবাব দিতে পারেনি শাহবাজ শরিফ সরকার।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের বিশ্ববিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র পহলগামের রিসর্টে জঙ্গিরা ২৫ জন হিন্দু পর্যটক ও এক কাশ্মীরি ঘোড়াচালককে ঠান্ডা মাথায় খুন করে। সে ব্যাপারে দায় স্বীকার করে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবার ছায়া সংগঠন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা পাকিস্তানি দূতের কাছে জানতে চাওয়া হয় লস্করের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক কী?
পহলগামের ঘটনার পর থেকেই পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলে ভারত বিরোধী কূটনৈতিক তৎপর চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, নিরাপত্তা পরিষদকে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে ভুল বোঝাতে এদিন ‘ব্যর্থ’ হয় শাহবাজ প্রশাসন। সেই হিসাবে কূটনৈতিক যুদ্ধে প্রথম চালেই পরাজয় মানতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। পরিষদের সদস্যরা পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার ও প্রয়োগের সম্ভাবনা নিয়েও অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে ইসলামাবাদের দূতকে।
শুধু তাই নয়, এই পরিস্থিতির মধ্যেও গত শনিবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আবদালি টু এবং গতকাল, সোমবার মাঝারি পাল্লার ফতেহ্ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোয় প্রশ্নের মুখে পড়ে নিরাপত্তা পরিষদের। বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য এ ব্যাপারে একান্ত আলোচনার দাবি জানিয়েছিল নিজে থেকেই, যাতে সেখানে ভারতের বিরুদ্ধে পরিষদকে খাড়া করানো যায়। কিন্তু, শেষমেশ পাকিস্তান সেখানেই নিজের পাতা ফাঁদে পড়ে যায়।
প্রায় ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ধরে চলা বন্ধ দরজা বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা একযোগে জঙ্গি হানার নিন্দা করে। পাকিস্তানের কাছে সকলে মিলে জঙ্গি দমনে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের দাবি জানিয়েছে। পরিষদ আরও ক্রুদ্ধ হয়েছে এই কারণে যে এই জঙ্গি হানায় বিদেশি পর্যটক সহ নিরীহ ভ্রমণার্থীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক সমর্থন আশার লোভে পা বাড়ানো পাকিস্তানকে সদস্যরা মিথ্যা তত্ত্ব প্রচারের যুক্তিতর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে। অবিলম্বে ভারতের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার চাপ দেওয়া হয়েছে শাহবাজ শরিফ সরকারকে। পরিষদের বৈঠকের পর পাকিস্তানি দূত আসিম ইফতিকার বলেন, পহলগাম হানার সঙ্গে তাঁর দেশের জড়িত থাকার যাবতীয় অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে। ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জল কখনও অস্ত্র হতে পারে না। তবে আমরাও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন ইফতিকার।