শেষ আপডেট: 1st February 2025 11:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটানা অষ্টমবার বাজেট পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর কিছু পরেই বেলা ১১টায় সংসদে বাজেট পেশ করবেন তিনি। বাজেটে মধ্যবিত্তের সুরাহা হয় কিনা, তা নিয়ে কৌতূহল সব মহলে।
চিরাচরিত ‘বহি-খাতা’ নয়, এবারে লাল রঙের ট্যাব থেকে বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী। পরনে বিহারের পদ্মশ্রীপ্রাপকের হাতে তৈরি মধুবনী শাড়ি । বাজেট পেশের আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব পঙ্কজ চৌধুরী।
শনিবার বেলা ১১’টায় দেশের ২০২৫-’২৬ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর সরকার তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর শনিবারই ফের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবে কেন্দ্র।
বিগত কয়েক বছর যাবত কেন্দ্রের বাজেটে সমাজের মধ্যবিত্ত অংশ নানাভাবে সুবিধা বঞ্চিত হয়েছে বলে সরকার পক্ষও একান্তে মানছে। গত বছর লোকসভা ভোটে বিজেপির খারাপ ফলের পিছনে সেটা একটা কারণ বলে দলের একাংশ মনে করে। জন্মলগ্ন থেকে বিজেপি মধ্যবিত্তের পার্টি হিসাবে পরিচিত। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং চাকরিজীবীদের মধ্যে দলের প্রভাব ছিল বেশি। তাতে অনেকটাই ফাটল ধরেছে বলে দলের নেতারা একান্তে মানছেন। তার উপর রাহুল গান্ধী লাগাতার প্রচার করে চলেছেন, মোদী সরকার আদানি-আম্বানিদের স্বার্থে কাজ করছে। শুক্রবার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগাম সমালোচনা করে বলেছেন, কেন্দ্র বাজেট তৈরি করে বড়লোকদের জন্য।
বিরোধীদের সমালোচনা এবং বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে অর্থমন্ত্রী শনিবার আয়করে সুবিধা ঘোষণা করতে পারেন বলে প্রত্যাশা তুঙ্গে। দশ লাখ টাকার বেশি আয়ের মানুষের উপর করের বোঝা বর্তমানে যথেষ্ট বেশি বলে সংশ্লিষ্ট সব মহলের অভিমত। ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে করে বোঝা পাঁচ শতাংশ কমালেই মধ্যবিত্তের যথেষ্ট সাশ্রয় হবে। আমানত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আয়করে সাশ্রয় হলে সেই অর্থ মানুষ সঞ্চয় করতে পারে। ফলে ঘুর পথে সুবিধা প্রদানের অর্থ সরকারের ঘরেও অনেকটা ফেরত আছে। সরকারি সঞ্চয় প্রকল্পগুলি মজবুত হয়। তাতে সরকারের প্রত্যক্ষ লাভ হল উন্নয়ন খাতে বাড়তি অর্থ ব্যয় করা সম্ভব।
মোদী সরকারের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কৃষকদের সুবিধা প্রদানের আশাও জোরদার। বিশেষ করে দাবি আছে কৃষিঋণ মকুব করার। সেটা করা হলেও মধ্যবিত্ত কৃষক লাভবান হবেন। কারণ ঝণ নেওয়ার মতো সক্ষমতা ক্ষুদ্র চাষি, ভূমিহীন কৃষকের তেমন নেই। যদিও কৃষিঋণ মকুবের মতো বড় সিদ্ধান্ত লোকসভা নির্বাচনের আগে নেওয়া হয়ে থাকে। ২০০৮ সালে প্রথম ইউপিএ সরকার ৬৫ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ মকুব করে পরের বছর লোকসভা ভোটে সুবিধা পেয়েছিল। আরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিল তারা।
কিন্তু মোদী সরকার কৃষিঋণ মকুবের পথে হাঁটেনি। পরের লোকসভা ভোট ২০২৯-এ। কিন্তু দল ও সরকারের অনেকে মনে করছেন ততদিন অপেক্ষা করলে পরিশোধ না হওয়া কৃষিঋণের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। তখন ছাড় দেওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে।