শেষ আপডেট: 13th January 2025 10:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামী ২৬ জানুয়ারি, প্রজাতন্ত্র দিবসে বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে চালু হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। দেবভূমি হিসাবে পরিচিত এই পাহাড়ি রাজ্যেই প্রথম বিজেপি তাদের জন্মলগ্নে ঘোষিত এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন নতুন ব্যবস্থা বলবৎ করতে সরকারি কর্মী, অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে জোর কদমে।
গত ৯ নভেম্বর ছিল উত্তরাখণ্ডের জন্মদিন। আগে ঠিক ছিল ওই দিন নতুন বিধি কার্যকর করা হবে। কিন্তু বিষয়টির সঙ্গে সংবিধানের যোগ থাকায় ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসকে বেছে নেওয়া হয়।
ইতিমধ্যে বিজেপি শাসিত আর এক রাজ্য গোয়াও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে ফেলেছে। এক বছর আগে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ঘোযণা করেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রথমে চালু হবে উত্তরাখণ্ডে।
১৯৮০-তে বিজেপি জন্মকালে যে কর্মসূচি ঘোযণা করেছিল তার অন্যতম ছিল সারা দেশে অভিন্ন দেওয়ানি আইন। সেই থেকে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত সব ভোটে দল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কেন উত্তরাখণ্ডকেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর জন্য বেছে নিও গেরুয়া শিবির? রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ মুসলিম। সংখ্যালঘুদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে শিখরা। মনে করা হচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যে সংখ্যালঘুদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া বুঝে নিতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে কী কী পরিবর্তন আসবে নাগরিক জীবনে? প্রশাসনেই বা কী পরিবর্তন হবে এরফলে?
অভিন্ন দেওয়ানি বিধির অর্থ দেশের সব নাগরকের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি আইন। এই ব্যাপারে অপরাধ দমন বা ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে কোনও ভেদাভেদ না থাকলেও দেওয়ানি আইনে আছে। উত্তরাখণ্ডের ক্ষেত্রে তার অবসান হতে চলেছে।
এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বিয়ের বয়স, বিবাহ বিচ্ছেদ, সম্পত্তির উত্তরাধিকার ইত্যাদি। মুসলিম-সহ বেশ কিছু ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ব্যাপারে নিজস্ব বিধি চালু আছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০১৯-এ তিন তালাককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইন করে। ফলে তিন তালাক প্রথায় বিবাহ বিচ্ছেদের প্রথা বাতিল হয়ে গিয়েছে। বিয়ের বয়স এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে এখনও বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজির গোষ্ঠীর মধ্যে ফারাক আছে।
উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার দু-বছর অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার শক্রুঘ্ন সিংহকে চেয়ারম্যান করে একটি গঠন করেছিল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করার উপায় বাতলে দিতে। সেই কমিটির সুপারিশ সরকার হবহু গ্রহণ করেছে।
কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাম্য দূর করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট আইনে। প্রতিটি বিয়ে রেজিস্টি নিশ্চিত করতে গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার সুপারিশ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত এখন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের কাজ করে।
একইভাবে ধর্ম নির্বিশেষে বিবাহ বিচ্ছেদ আদালত থেকে অনুমোদন করাতে হবে। অর্থাৎ মুসলিমদের ক্ষেত্রে তালাক ব্যবস্থা থাকলেও তা আদালতে নথিভুক্ত করতে হবে।