শেষ আপডেট: 23rd February 2025 11:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, মার্কিন সংস্থা ইউএসএইড (USAID) ভারতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। ওয়াশিংটনের কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্স (CPAC)-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, 'ভারতের নির্বাচনে সাহায্য করার জন্য ১৮ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে। কেন দেওয়া হয়েছে? ভারতকে আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন নেই।'
তবে ট্রাম্পের উল্লেখ করা এই ১৮ মিলিয়ন ডলারের তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। মার্কিন সরকারের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (DOGE)-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের ভোটার টার্নআউট বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল। ট্রাম্প আরও অভিযোগ করেন, ভারত আমেরিকাকে উচ্চ শুল্কের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সমস্যায় ফেলে এবং তার মধ্যেই এই সাহায্যের কোনও যুক্তি নেই।
এই বিষয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'আমেরিকা থেকে কিছু তথ্য উঠে এসেছে যা অবশ্যই উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ইউএসএইড ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতে কাজ করার অনুমতি পেয়েছিল, কিন্তু আমেরিকার পক্ষ থেকে এখন বলা হচ্ছে যে এখানে খারাপ উদ্দেশ্যে কাজ হয়েছে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তাহলে দেশের জানা উচিত কারা এতে জড়িত।'
এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কেন্দ্রের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগে চলা প্রকল্পগুলির অধীনে কত টাকা ভারতে এসেছে, সে সম্পর্কে স্বচ্ছতা দাবি করেছে কংগ্রেস। দলটি এও বলেছে, ভারতীয় গণতন্ত্রে বিদেশি হস্তক্ষেপে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা জানান, 'অনেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যেই এই দাবিকে মিথ্যে প্রমাণ করেছে। ইউএসএইডের তহবিল ভারতের জন্য নয়, বাংলাদেশের জন্য ছিল।'
এদিকে, বিজেপির নেতা অজয় আলোক কংগ্রেসের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, '২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ভারত ২১১৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, কিন্তু ২০১৪ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত মাত্র ১.৫ মিলিয়ন ডলার এসেছে। আমরা ধীরে ধীরে এই ধরনের অনুদান বন্ধ করে দিচ্ছি। মার্কিন সরকারও জানিয়েছে, কোন কোন সংস্থা এই টাকা পেয়েছে। ভারত জোড়ো যাত্রার মতো কর্মসূচি এই তহবিল থেকেই চালানো হয়েছে।'
এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) তদন্ত শুরু করেছে। বিভিন্ন এনজিও, সমাজকর্মী, সংবাদমাধ্যম ও ব্যবসায়িক সংস্থার আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই তদন্তের মূল লক্ষ্য, ভারতীয় নির্বাচনে বিদেশি অনুদানের মাধ্যমে কোনও প্রভাব পড়েছে কি না, তা নিশ্চিত করা।