তাহাউর রানা।
শেষ আপডেট: 14th February 2025 07:39
মার্কিন সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রত্যর্পণের বিষয়টি দ্রুত নিশ্চিত করার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদও জানান। তিনি বলেন, 'মুম্বই হামলার এক অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বিচারের জন্য ভারতে আনা হচ্ছে। দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাই।'
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী তাহাউর হুসেন রানা মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। ওই হামলায় ১৬৬ জন নিহত ও ৩০০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও ২৬ জন বিদেশি ছিলেন।
এই হামলার পরিকল্পনার খুঁটিনাটি জানতেন রানা। তিনিই এদেশ থেকে পাকিস্তানে অবস্থিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছিলেন। তাঁর অন্যতম সহযোগী ছিলেন ডেভিড কোলম্যান হেডলি, যিনি পরবর্তীকালে এই হামলায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তদন্তে সহযোগিতা করেন।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার অভিযোগও রয়েছে তাহাউর রানার বিরুদ্ধে। মুম্বই পুলিশের ৪০০ পাতার একটি চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি ২০০৮ সালের ১১ নভেম্বর ভারতে আসেন এবং ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এখানেই থাকেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি মুম্বইয়ের রেনেসাঁ হোটেলে দু'দিন থেকেছিলেন।
মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ তদন্তে রানার ও হেডলির মধ্যে ইমেল যোগাযোগের প্রমাণ পায়। একটি মেলে ডেভিড হেডলি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর কর্মকর্তা মেজর ইকবালের ইমেল আইডি চেয়েছিলেন। মেজর ইকবালও ২৬/১১ হামলার অন্যতম অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত হন।
এর আগে তাহাউর রানার বিরুদ্ধে আমেরিকার নর্দার্ন ডিসট্রিক্ট অব ইলিনয় আদালতে মামলা হয়। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়, যার মধ্যে দুটি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। ডেনমার্কে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার ষড়যন্ত্র এবং লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে সহযোগিতা।
জানা গেছে, রানাকে ভারতে ফিরিয়ে এনে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA), মুম্বই পুলিশ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তাঁকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এবং ২৬/১১ হামলায় ভূমিকার কথা মাথায় রেখে কড়া শাস্তির মুখে পড়বেন তিনি। সেই কারণেই ভারত দীর্ঘদিন ধরেই রানার প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে আসছিল। এবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মতির পরে, এই জটিল আইনি লড়াই শেষ হতে চলেছে।