শেষ আপডেট: 9th November 2024 11:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মণিপুরের জিরিবাম জেলায় এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনার কথা শুক্রবারই প্রকাশ্যে আসে। পরে ৩১ বছরের ওই মহিলার স্বামী ধর্ষণ করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ তোলেন। তিন সন্তানের মা ওই আদিবাসী মহিলাকে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীরা ধর্ষণ করে ঘরে বন্দি করে জ্বালিয়ে দেয় বলে তাঁর স্বামী পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন।
যদিও শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে অনুমান উপত্যকার দিক থেকে তারা এসেছিল। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতি এবং সম্প্রদায়গত কারণে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। জাইরন গ্রামে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে সশস্ত্র হামলাকারীরা নৃশংসভাবে তাঁর স্ত্রীকে যৌন নির্যাতন করে খুন করে বলে তাঁর অভিযোগ। একইসঙ্গে গ্রামের ১৬টি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, অসমের শিলচরে মহিলার দগ্ধ দেহ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে এই ব্যবস্থা থাকলেও দূরত্বের কারণে দেহ শিলচরে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান। আদিবাসী গোষ্ঠীর শীর্ষ সংগঠন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বর্বর ঘটনা দীর্ঘ জাতিদাঙ্গার আরেকটি জ্বলন্ত নিদর্শন।
বৃহস্পতিবার রাতে ফের অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। ১৬টি বাড়ি আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পার্বত্য রাজ্যের জিরিবাম জেলার গ্রামে ওই হামলায় এক মহিলার মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করে কুকি-জো সংগঠন। কিন্তু, পুলিশ প্রথম দিকে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়নি। অভিযোগ, সশস্ত্র জঙ্গিরা এই হামলা চালায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে জিরিবাম জেলার জাইরোন হমার গ্রামে। জঙ্গিরা গ্রামে ঢুকে অন্তত ১৬টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রাথমিকভাবে খবর মিলেছে যে, অতর্কিত হামলায় গ্রামবাসীরা প্রাণভয়ে পালিয়ে যান। তাঁরা গিয়ে পাশ্বর্বর্তী জঙ্গলে আশ্রয় নেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
গতবছর মে মাস থেকে জাতিদাঙ্গায় বিপর্যস্ত মণিপুর। অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন হামলা ও প্রতি হামলায়। ২০২৩ সালের ৩ মে আদিবাসী সংহতি মিছিলের পর থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মণিপুর। নাগা ও কুকি-মেইতেই দাঙ্গায় একের পর এক জেলায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল সহ উপত্যকা এলাকায় রয়েছে মেইতেই সম্প্রদায়। যারা জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ। অন্যদিকে, জঙ্গলে ঘেরা পার্বত্য এলাকায় বসবাস নাগা ও কুকিদের। যারা ৪০ শতাংশ জনসংখ্যায়।