শেষ আপডেট: 9th March 2024 13:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১৫ জানুয়ারি তাঁর জন্মদিনেই বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো ঘোষণা করেছিলেন, উত্তর প্রদেশে লোকসভা নির্বাচনে তিনি কোনও জোটে নেই। বিএসপি একাই লড়াই করবে ৮০ আসনে।
শনিবার সেই একই কথা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন বহেনজি। বলেছেন, সংবাদমাধ্যম গুজব ছড়াচ্ছে যে বিএসপি ইন্ডিয়া জোটে শামিল অথবা তৃতীয় মোর্চা গঠন করতে পারে। বিএসপি সুপ্রিমো সাফ জানিয়েছেন, এসবই মিডিয়ার পরিকল্পিত গুজব। বিএসপি কারও সঙ্গে নেই। একলা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের কোনও নড়চড় হয়নি।
২০১৯-এর বিএসপি এবং এসপি-র জোট হয়েছিল। দুই দল যথাক্রমে দশটি এবং পাঁচটি আসনে জয়লাভ করে সেবার। কিন্তু ভোটের পরই জোট ভেঙে যায়। দু-বছর আগের বিধানসভা ভোটেও আর দুই দলের বোঝাপড়া হয়নি। সেই ভোটে মায়াবতী কার্যত ওয়াকওভার দেন বাকিদের। তিনবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলিত নেত্রী হিসাবে দেশে সবচেয়ে পরিচিত মুখ বহেনজির পার্টি বিধানসভায় মাত্র একটি আসনে জয়লাভ করে। প্রাপ্ত ভোট ছয় শতাংশের নিচে নেমে যায়।
তারপর সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মায়াবতীর সঙ্গেও কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। দু’জনের ফোনে যোগাযোগ রাখেন নিয়মিত। ২০২২-এর বিধানসভা ভোটের এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস-এসপি-বিএসপি জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সনিয়া। বিএসপি নেত্রী বেশ কিছুদিন সেই প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখে তা খারিজ করে দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে দলেও নানা পরিবর্তন করেছেন বহেনজি। ভাইপোকে সরকারিভাবে তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন ব্রাহ্মণ মুখ সতীশ মিশ্রকে। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, দলকে নতুন করে গড়তে চাইছেন নেত্রী।
তবে তার সঙ্গে জোট না করার কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে দুটি কারণে, তিনি কোনও জোটেই নাম লেখাতে চাইছেন না। এক. বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট বা তৃতীয় কোনও মোর্চায় যোগ দিয়ে তিনি মোদী-শাহের রোষানলে পড়তে চান না। বিজেপির সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তে এক প্রকার তালাচাবি পড়ে গিয়েছে। বিএসপি সুপ্রিমো মনে করছেন, মোদীই ফের দিল্লির মসনদে বসতে চলেছেন। তাই ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী জোটে গেলে নির্বাচনের পর ইডি সিবিআইয়ের ধাক্কা সামলাতে হতে পারে।
দ্বিতীয়ত. মায়াবতী মনে করছেন, তাঁর দলের এখন যা সাংগঠনিক অবস্থা তাতে বিজেপি কিংবা এসপি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে গেলে বিএসপির অবশিষ্ট ভোটও হাতছাড়া হয়ে যাবে। তখন দল টিকিয়ে রাখাই সমস্যা হয়ে যাবে। এখনই দল প্রায় উঠে যাওয়ার জোগার হয়েছে। মূলত এই দুটি কারণে বহেনজি একলা চলো নীতি নিয়েছেন। দল টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি বিজেপির সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখা তাঁর এখন পয়লা নম্বর লক্ষ্য। তাই মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফোঁস করলেও মায়াবতীর সেই তেজ আর নেই।