শেষ আপডেট: 24th January 2025 21:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেরলের ওয়ানাড় জেলায় বাঘের হামলায় এক মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। শুক্রবার সকালে এই ঘটনা ঘটে যখন রাধা (৪৮) পানচারাকোল্লি এলাকায় কফি তুলছিলেন। রাধা একজন বনপ্রহরীর স্ত্রী। স্থানীয় থান্ডারবোল্টস কমান্ডো বাহিনীর তল্লাশি অভিযানে সকাল ১১টায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রাধার ভাইজি মিনু মণি, ভারতের জাতীয় ক্রিকেটার, এই দুঃসংবাদে শোকাহত। মৃতের পরিবারের জন্য রাজ্য সরকার ১১ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।
কেরলের বনমন্ত্রী এ.কে. শশীন্দ্রন জানিয়েছেন, বাঘটিকে জীবিত অথবা প্রয়োজনে মৃত অবস্থায় ধরার জন্য বনদফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এই ঘটনা বনাঞ্চলের মধ্যেই ঘটেছে, তবে বাঘটি বন ছেড়ে মানুষের বসতিতে ঢুকেছিল কি না, তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।”
মন্ত্রী আরও জানান, বাঘ ধরার জন্য খাঁচা ও অবশ করার ওষুধ ব্যবহার করা হবে। কিন্তু তা ব্যর্থ হলে বাঘটিকে ‘মানুষখেকো’ ঘোষণা করে গুলি করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, এলাকায় টহলদারি আরও জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উত্তর ওয়ানাড় বন বিভাগের ডিএফও মার্টিন লওয়েল জানিয়েছেন, ৫০ জন বনকর্মীকে এই অভিযানে মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এলাকায় বাঘটির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, “আমাদের প্রথম লক্ষ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। বাঘটিকে জীবিত ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।”
এর আগে ওয়ানাড়ের পুলপল্লি অঞ্চলে আরেকটি বাঘ গৃহপালিত পশুদের আক্রমণ করেছিল। ১০ দিনের চেষ্টায় ১৬ জানুয়ারি সেটিকে ধরা সম্ভব হয়েছিল।
ওয়ানাড়ে ৫০ শতাংশ এলাকা বনাঞ্চল হওয়ায় বহুদিন ধরে মানুষ-প্রাণীর দ্বন্দ্বে ভুগছে। পরিবেশ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে কেরলে বন্যপ্রাণীর আক্রমণে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাধার মৃত্যুর পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা তফসিলি জাতি ও উপজাতি উন্নয়ন মন্ত্রী ও.আর. কেলুর পথ আটকে প্রতিবাদ জানান। কংগ্রেস বিধায়ক টি. সিদ্দিক রাজ্য সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ তুলে জানান, এই সমস্যা নিয়ে দলের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
রাধার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করে বলেছেন, “মানুষ-প্রাণীর দ্বন্দ্বের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন।”
কেরল সরকারের এই পদক্ষেপ ও স্থানীয়দের প্রতিবাদ ভবিষ্যতে মানুষ-প্রাণীর সহাবস্থানের পথ কতটা প্রশস্ত করবে, তা দেখার বিষয়।