শেষ আপডেট: 24th September 2024 13:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলবে। রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত মতো তদন্ত করবে লোকায়ুক্ত। মঙ্গলবার কর্নাটক হাই কোর্ট এই রায় দিয়েছে।
হাই কোর্ট রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেছে, দুর্নীতির প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত হওয়া দরকার। বিশেষ করে তা যদি সরকারি পদাধিকারী এবং জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে হয়।
হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার এরপর সুপ্রিম কোর্টে যাবে কি না এখনও স্পষ্ট নয়। তবে হাই কোর্টের রায়ে সিদ্দারামাইয়ার বিপদ বাড়ল বলেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। অনেকেই মনে করছেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দশা হতে পারে প্রবীণ নেতা সিদ্দারামাইয়ার। কারণ, মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে নিয়োজিত লোকাউক্ত অনুসন্ধানের ভার সিবিআই, ইডির মতো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে থাকে। তদন্তের নির্দেশ বহাল থাকলে ইডি, সিবিআই তলব করতে পারে কর্নাটক কংগ্রেসের এক নম্বর নেতাকে।
টিজে আব্রাহাম, প্রদীপ এবং স্নেহময়ী কৃষ্ণা নামে তিন জন-আন্দোলনকারী রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গেহলটের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি জমির প্লট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। মূল অভিযোগ, সিদ্দারামাইয়া নথিপত্র বদলে তাঁর স্ত্রী পার্বতীকে এমইউডিএ বা মহীশূর নগরোন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আবাসন প্রকল্পে মহার্ঘ প্লট সস্তায় পাইয়ে দিয়েছেন। এরফলে তিনি প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সুবিধা পেয়েছেন তিনি। জমির পরিমাণ ৩.১৪ একর।
সিদ্দারামাইয়া রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে গেলে উচ্চ আদালত তাতে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। পরে মামলার কয়েক দফা শুনানির মঙ্গলবার রায় দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের খবর, সিদ্দারামাইয়া আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটায় দল তাঁকে সময় দিচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝে গিয়েছে, অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়। গত মাসে মুখ্যমন্ত্রীকে দিল্লিতে ডেকে কথা বলেন রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়্গে। সেই বৈঠকেই প্রবীণ নেতাকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। তাহল, আইনি লড়াইয়ে সিদ্দারামাইয়া তদন্ত থেকে রেহাই না পেলে তাঁকে গদি ছাড়তে হবে।
কংগ্রেস সুত্রের খবর, সিদ্দারামাইয়া সরে যেতে নিমরাজি নন। তিনিও চান, আগে আদালতে ফয়সালা হোক। তিনি সত্যিসত্যিই দুর্নীতি করেছেন প্রমাণ হলে সরে যাবেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী চান আদালত তদন্ত বহাল রাখলেই সিদ্দারামাইয়ার সরে যাওয়া দরকার।
শেষ পর্যন্ত সিদ্দারামাইয়াকে সরে যেতে হলে কে হতে পারেন কর্নাটকের পরবর্তী কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী? উপ মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারের নাম সবচেয়ে আগে এলেও অনেকেই মনে করছেন রাহুল গান্ধী সিদ্ধান্ত নেবেন ওবিসি ভোটের অঙ্ক বিবেচনায় রেখে। সেই অঙ্কে এগিয়ে আছেন পূর্তমন্ত্রী সতীশ জরকিহোলী। তাঁকেও দিল্লিতে ডেকে কথা বলেছেন রাহুল এবং খাড়্গে। জানা গিয়েছে, সরে যেতে হলে সিদ্দারামাইয়াও তাঁর হাতেই কুর্সি তুলে দিতে আগ্রহী। শুধু জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগই নয়, কর্নাটকে গত বছর মে মাসে সিদ্দারামাইয়া মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই কংগ্রেস সরকারের অন্দরে তাঁকে সরানোর দাবিতে চোরা স্রোত বইছে।