শেষ আপডেট: 4th September 2024 12:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৭-এ তিনি ভারতের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হবেন। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের বরিষ্ঠ বিচারপতিদের একজন বিবি নাগরত্না আদালতে বসে বলেছেন, আমরা বিচার বিভাগের যুক্ত লোকেরা প্রতি বছর গরমের সময় লম্বা ছুটি ভোগ করি। সবেতন ছুটি। কাজ না করে, লম্বা সময় ছুটি ভোগ করেও বেতন নিতে আমার অন্তর্রাত্মা সায় দেয় না। কিন্তু চাইলেই বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
মধ্যপ্রদেশের একটি মামলায় নাগরত্না তাঁর এই ব্যক্তিগত অনুভুতির কথা এজলাসে প্রকাশ করেন। সেই মামলা ছিল একজন বিচারকের। মধ্যপ্রদেশ সরকার কোনও একটি বিবাদের কারণে নিম্ন আদালতের বিচারককে বরখাস্ত করেছিল। বিচারপতি নাগরত্নাই মাস কয়েক আগে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের রায় দিয়ে ওই বিচারককে চাকরিতে বহাল করেন।
সেই বিচারক এবার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ের বেতন দেওয়া হোক। রাজ্য সরকার তাঁর এই দাবি মানছে না। শীর্ষ আদালত এই ব্যাপারে নির্দেশ দিক। শুনানিতে নাগরত্না মামলাকারীর আইনজীবীকে বলেন, মধ্যপ্রদেশ সরকারের বরখাস্তের আদেশকে সুপ্রিম কোর্ট বেআইনি বলেনি। শুধু বরখাস্তের মেয়াদ কমিয়ে চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে। বরখাস্ত থাকাকালে ওই ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করেননি। বিনা কাজে বেতন দাবি করেন কীভাবে?
এরপরই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে নাগরত্না বলেন, আমার খারাপ লাগে গরমের ছুটির সময়ের বেতন নিতে। এই সময় আমরা ছুটি কাটাই। এজলাসে আসি না। বিচার করি না। এটাও বিনা কাজে বেতন নেওয়ার শামিল। এই ব্যাপারে আমার অন্তর্রাত্মা সায় দেয় না।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সিনিয়রিটি অনুযায়ী বিবি নাগরত্নার ২০২৭-এর মাধামাঝি সময় প্রধান বিচারপতি হবেন। সে ক্ষেত্রে তিনিই হবেন প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি। তাঁর কাজের মেয়াদ অবশ্য হবে মাত্র ২৭ দিন। কর্নাটকের বাসিন্দা নাগরত্নার বাবা ইএস ভেঙ্কটরামাইয়া শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। বাবার মতো মেয়েও বহু ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট-সহ আদালতগুলির গ্রীষ্ম এবং অন্যান্য ছুটির মেয়াদ নিয়েও বিতর্ক আছে। লম্বা ছুটির মেয়াদ কমানোর দাবি বারে বারে উঠেছে। বিচারপতি এবং আইনজীবীদের পাল্টা যুক্তি, ছুটি মানেই বিচারালয়ের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বেড়াতে চলে যান না। বিচারপতি, আইনজীবীদের লম্বা সময় কাটে মামলার কাগজপত্র পড়তে। তাছাড়া তাঁদের বিস্তর পড়াশুনো করতে হয় সুষ্ঠ বিচারের আশায়। তারপরও নাগরত্নার কথা বহু মানুষের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। অনেকে আশা করছেন দেড়-দু বছর পর তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হলে আদালতের ছুটির মেয়াদ কমতে পারে।