শনিবার নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কনস্যুলেটে শশী থারুর বলেন, “সন্ত্রাসবাদ এখন আর কোনও একটি দেশের সমস্যা নয়। এটা বিশ্বব্যাপী ব্যাধি। সবাইকে একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।”
শশী থারুর
শেষ আপডেট: 25 May 2025 03:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পহেলগামের ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর পাকিস্তানে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ও লঞ্চপ্যাডে ভারত যেভাবে মেপে ও পরিকল্পনা করে প্রত্যাঘাত করেছে, তা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। শনিবার নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কনস্যুলেটে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদ এখন আর কোনও একটি দেশের সমস্যা নয়। এটা বিশ্বব্যাপী ব্যাধি। সবাইকে একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।”
সফরের শুরুতেই সর্বদলীয় এই প্রতিনিধিদল গিয়েছিলেন নিউ ইয়র্কের ৯/১১ মেমোরিয়ালে। সেখানে থারুর বলেন, “এই জায়গাটিতে এসে আবেগ ধরে রাখা কঠিন। আমরা এসেছি এমন এক সময়ে, যখন ভারতে পহেলগামে আরও একটি জঙ্গি হামলা ঘটেছে। এই বার্তা দিতে চেয়েছি, সন্ত্রাসের ক্ষত দুই দেশই বয়ে বেড়াচ্ছে।”
পহেলগাম হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে থারুর বলেন, “হামলাকারীরা আগে ধর্ম যাচাই করে দেখছিল, তারপর হত্যা করছিল। অধিকাংশ নিহতই হিন্দু ছিলেন। এর পেছনে স্পষ্টভাবে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর ষড়যন্ত্র ছিল।” তবে এর জবাবে কাশ্মীর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ঐক্যের ছবি উঠে এসেছে বলেও জানান তিনি।
থারুর বলেন, “হামলার এক ঘণ্টার মধ্যেই TRF বা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায় স্বীকার করে। এই সংগঠনটি লস্কর-ই-তইবার একটি মোর্চা, যা রাষ্ট্রসংঘ ও আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত। ভারত আগেই রাষ্ট্রসংঘে এই সংগঠনের বিষয়ে তথ্য দিয়েছিল।” তবু পাকিস্তান হামলার দায় অস্বীকার করেছে এবং চিনের সহায়তায় রাষ্ট্রসংঘের খসড়া বিবৃতি থেকে TRF-এর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন থারুর।
ভারতের প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “আমি সরকারের অংশ নই। বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসেবে আমি একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম—সময় এসেছে স্মার্টভাবে এবং কড়া জবাব দেওয়ার। খুশি যে ভারত ঠিক সেটাই করেছে।” তিনি জানান, ভারতের প্রত্যাঘাত ছিল ৯টি নির্দিষ্ট জঙ্গি ঘাঁটি, সদর দফতর ও লঞ্চপ্যাডে। এর মধ্যে ছিল লস্কর-ই-তইবার মুরিদকির ঘাঁটি এবং জইশ-ই-মহম্মদের বাহাওয়ালপুর বেস, যা সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্ল হত্যার ঘটনায় জড়িত।
থারুর বলেন, “ভারতের বার্তা স্পষ্ট—সন্ত্রাসের জবাব দেবে ভারত, কিন্তু যুদ্ধ চায় না। এই হামলা প্রতিশোধ, কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রিত এবং সুপরিকল্পিত।” এই প্রতিনিধিদল বিভিন্ন দেশে গিয়ে সেখানকার সরকারের প্রতিনিধিদের, বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞদের ও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন। থারুর জানান, “আমরা চাই, বিশ্ব ভারতকে বুঝুক—আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, কোনও রকম বিভ্রান্তি ছাড়াই।”
#WATCH | New York, US: During an interaction at the Consulate, Congress MP Shashi Tharoor says, " I don't work for the government, as you know. I work for an opposition party...I myself authored an op-ed...saying the time has come to hit hard but hit smart. I'm pleased to say… pic.twitter.com/9dPVuWzZJn
— ANI (@ANI) May 25, 2025
কারা রয়েছেন এই দলে?
শশী থারুরের নেতৃত্বে এই সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে রয়েছেন শম্ভবী চৌধুরী (লোক জনশক্তি পার্টি), সরফরাজ আহমেদ (ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা), জি এম হরীশ বালায়াগি (তেলুগু দেশম পার্টি), শশাঙ্ক মণি ত্রিপাঠী, তেজস্বী সূর্য, ভূবনেশ্বর কে. লতা (সবাই বিজেপি), মল্লিকার্জুন দেবদা (শিব সেনা), এবং আমেরিকায় ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তরনজিৎ সিং সন্দু।