শেষ আপডেট: 4th October 2024 14:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু শুধু অনলাইনই নয়, অফলাইন মানে সরাসরি ফোন করে মানুষকে ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা পকেটে ভরানোর খবরও হামেশাই সামনে আসে। এবার মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনার সাক্ষী হল দেশ।
পুলিশের নাম করে ভুয়ো নম্বর থেকে আগরার এক শিক্ষিকাকে হুমকি ফোনের অভিযোগ। যা শুনে অসুস্থ হয়েই উত্তর প্রদেশের আগরার সরকারি স্কুলের শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
ঠিক কী অভিযোগ?
সূত্রের খবর, গত সোমবার আগরার বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সি ওই স্কুল শিক্ষিকার কাছে একটি উড়ো ফোন আসে। পুলিশের পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে জানান, তাঁর মেয়ে মধুচক্রের সঙ্গে যুক্ত। কলেজ পড়ুয়া মেয়ের ‘কুকীর্তি’ যাতে জানাজানি না হয় সেকারণে ১ লক্ষ টাকা চেয়ে পাঠানো হয়। হুমকি দেওয়া হয় টাকা পাঠালে মেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি ফিরে যাবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে কোনওরকম অভিযোগ দায়ের হবে না।
বিষয়টি শোনার পরই নিজের ছেলেকে ফোন করে পুরো বিষয়টি জানান তিনি। তারপরই মেয়ের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় মালতী ভার্মা নামে সরকারি স্কুলের ওই শিক্ষিকার।
মৃতার ছেলে দীপাংশু জানান, গত সোমবার দুপুরে আমি কাজে ছিলাম। আচমকা মা ফোন করে পুরো বিষয়টি বলেন। খবর শোনার পর থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মায়ের থেকে কোনওভাবে নম্বরটি নিয়ে দেখি ওই নম্বরটি একটি পুলিশ অফিসারের। কারণ নম্বরটি দেখে হোয়াটস অ্যাপে সার্চ করতেই দেখা যায় ডিপিতে একজন পুলিশ অফিসারের ছবি রয়েছে।
দীপাংশু আরও জানান, বিষয়টি বুঝতে পারি পরে ভালো করে নম্বরটি দেখার পর। ফোনের কোড নম্বর দেখে বুঝতে পারিওটা ভারতের নম্বরই নয়। +৯২ দিয়ে শুরু হয়েছিল নম্বরটি। এরপরই তিনি জানতে পারেন ফোনটা পাকিস্তান থেকে আসতে পারে। বিষয়টা যে পুরোপুরি ভুয়ো তা পরিষ্কার হয়ে যায়।
এরপর সঙ্গে সঙ্গে বোনকে ফোন করে শিক্ষিকার ছেলে জানতে পারেন তিনি সুস্থ এবং নিরাপদেই রয়েছেন। কিন্তু ফোন পেয়েই মা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে প্রথমে অসুস্থ বোধ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আগরার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত। ওই নম্বরটি কার তা জানার চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর আচমকাই বুকে ব্যাথা অনুভব করেন তিনি। ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। শিক্ষিকার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে শিক্ষিকার।