শেষ আপডেট: 11th January 2025 16:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নতুন বিধি (ইউজিসি রুল ২০২৫) বাতিলের দাবিতে প্রস্তাব গ্রহণ করল তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। বিধানসভায় সরকারের তরফে পেশ করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউজিসি'র নতুন বিধি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ।
তামিলনাড়ুর উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী গোভি চেজিয়ান বলেন, বিধানসভায় পাশ হওয়া প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হবে। তারা ইউজিসির নতুন বিধি প্রত্যাহার না করলে ডিএমকে আন্দোলনের পথে হাঁটবে।
তামিলনাড়ু সরকারের বক্তব্য, নতুন বিধিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন উপাচার্য নিয়োগে আচার্যদের শেষ কথা বলার অধিকার দিয়েছে। এই ব্যবস্থা রাজ্য সরকারের অধিকারকে পুরোপুরি নসাৎ করার চেষ্টা।
নতুন বিধিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার যোগ্যতায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। চলতি বিধিতে বলা আছে, উপচার্য হতে পারবেন শিক্ষা জগতের কোনও বিশিষ্টজন। নয়া বিধিতে বলা হয়েছে সমাজের যে কোনও পেশার গুণিজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা হতে পারবেন।
সেই বিধিতেই উপচার্য নিয়োগে ক্ষমতা বাড়ানো।হয়েছে আচার্যদের। বলা হয়েছে, সার্চ কমিটির তৈরি প্যানেল থেকে একজনকে বেছে নিতে পারবেন আচার্য। মাঝমানে দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোনও পক্ষের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকবে না।
তবে নয়া বিধিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আচার্য বলতে শুধু রাজ্যপালদেরই বিবেচনা করা হবে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আচার্য করা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য পদে পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে রবীন্দ্রভারতী এবং আলিয়া বিশ্বিবিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা উপাচার্যরা কেউ শিক্ষা জগতের মানুষ নয়। রবীন্দ্র ভারতীর উপাচার্য হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। আলিয়ার উপাচার্য একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁদের নিয়োগ করেছেন তাঁর বিশেষ ক্ষমতাবলে।
প্রচলিত ব্যবস্থায় রাজ্যপালেরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের ভূমিকা পালন করে থাকেন। যদিও বেশ কিছু রাজ্যে রাজ্যপালের পরিবর্তে সরকারের মনোনীত ব্যক্তিরা আচার্যের ভূমিকা পালন করেন। ইউজিসির নয়া বিধিতে সেটাই সাধারণ নিয়ম হতে যাচ্ছে। অর্থাৎ যে কোনও বিশিষ্টজনকে সরকার আচার্য হিসাবে বেছে নিতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে বিধানসভায় একটি আইন পাশ হয়ে আছে। রাজ্যপাল বিলটিতে সম্মতি না দেওয়ায় সেটি কার্যকর করা যায়নি।
সমাজের নানা পেশার গুণিজনদের উপাচার্য করার প্রস্তাবটি নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক আছে। ইউজিসি এখন সেটি বাস্তবায়িত করতে চাইছে। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ামক সংস্থার মতে, এরফলে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সমাজের সব অংশের সম্পৃক্ততা বাড়বে। নতুন নতুন ধারণায় সমৃদ্ধ হবে উচ্চশিক্ষা, বক্তব্য কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রকের।
অন্যদিকে, শিক্ষা জগতের অনেকেই মনে করছেন, উপাচার্য পদে নিয়োগের ভিন্ন পেশার লোকেদের নিয়োগের সুযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্য সরকারের কাছের লোকেদের সুযোগ দেওয়া। শিক্ষা জগতের তুলনায় ভিন্ন পেশায় গেরুয়া শিবিরের প্রভাব বেশি আছে।