শেষ আপডেট: 27th February 2025 14:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তামিলনাড়ুর ডিএমকে মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন তাঁর হিন্দি-বিরোধী বিদ্রোহ বৃহস্পতিবারেও চালিয়ে গেলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রি-ভাষা বিতর্কের আগুনে নতুন করে ঘি ছড়িয়ে স্ট্যালিন বলেন, দিল্লি থেকে জোর করে ভাষা চাপিয়ে দেওয়ায় কয়েক যুগ ধরে ২৫টি উত্তর ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষাকে গিলে খেয়ে ফেলেছে হিন্দি। একচ্ছত্র হিন্দি ভাষার প্রতাপে বহু প্রাচীন ভারতীয় মাতৃভাষা লুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
স্ট্যালিন আরও বলেন, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার কখনই হিন্দি ভাষায় প্রাণকেন্দ্র ছিল না। তাদের বর্তমান ভাষা হচ্ছে অতীতের ধ্বংসাবশেষ। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রকে যে চিঠি লিখেছেন সেটা সহ একটি এক্সবার্তায় একথা বলেছেন। জাতীয় শিক্ষা নীতির অধীনে কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া হিন্দি ভাষা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই দক্ষিণী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তোপ দাগছেন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, হিন্দিকে জোরের সঙ্গে সামনে আনতে গিয়ে এই ভাষার মা সংস্কৃত পিছিয়ে পড়ে যাচ্ছে।
দেশের ভাষাগত বৈচিত্র্যকে মুছে ফেলতে হিন্দিকে গোটা দেশের ভাষা করে তোলার চেষ্টা চলছে। যেখানে হিন্দিই হবে মুখ্য, আর বাকি সব ভাষা হয়ে যাবে গৌন। তিনি দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, হিন্দির দাপটে উত্তর ভারতেরই অনেক ভাষা বর্তমানে বাঁচার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের শেষ নিঃশ্বাস আসন্ন হয়ে পড়েছে। যেমন- ভোজপুরি, মৈথিলী, অবধি, ব্রজ, বুন্ডেলি, গাড়োয়ালি, কুমায়নি, মগহি, মারওয়াড়ি, মালবি, ছত্তীসগড়ি, সাঁওতালি, অঙ্গিকা, হো, খারিয়া, খোর্ঠা, কুরমালি, কুরুখ এবং মুন্ডারি সহ অনেক ভাষা অবলুপ্তির পথে।
স্ট্যালিনের কথায়, হিন্দি-সংস্কৃতের আধিপাত্যবাদে ২৫টি উত্তর ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। শতাব্দী প্রাচীন দ্রাবিড় আন্দোলন এখনও পর্যন্ত তামিল ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করে চলেছে। তিনি নতুন শিক্ষা নীতিকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সকলের উপরে হিন্দি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পিত প্রয়াস বলে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, মহাকুম্ভে কি অন্য ভাষার সাইন বোর্ড ছিল না! সংবিধানের অষ্টম তফসিলে ২২টি সরকারি মান্যতা প্রাপ্ত ভাষা ছিল, কিন্তু তার অনেকগুলিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আসলে ভাষাগত ঐক্যের নামে দেশের ভাষাগত বৈচিত্র্যকে বিনষ্টের পরিকল্পিত চক্রান্ত করছে বিজেপি। ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, রাজ্যের শিক্ষা নীতিতে দ্বিভাষিক মাধ্যমের যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাই বজায় থাকবে ত্রি-ভাষিক মাধ্যমের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।