নিজস্ব ছবি
শেষ আপডেট: 23 April 2025 02:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মঙ্গলবার সন্ধের পর থেকে পহেলগামে জঙ্গি হানার যে ছবি ও ভিডিও সমাজমাধ্যমে দেখা গিয়েছে তা শিউরে ওঠার মতই। কাশ্মীর নিয়ে বাঙালির রোমান্টিকতা নতুন নয়। ইদানীং কাশ্মীরে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসায় বাঙালি পর্যটকদের উৎসাহের যেন বাঁধ ভেঙেছিল। কিন্তু সেই বাঁধে বড়সড় ফাটল ধরিয়ে দিল মঙ্গলবারের ভয়াবহ হামলার ঘটনা। এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাঁর মধ্যে রয়েছেন কলকাতার তরুণ বিতান অধিকারী (Bitan Adhikary)। যাঁকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা।
এদিন রাতে বিতানের স্ত্রী সোহিনী অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবরকম ভাবে তাঁর পাশে থাকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর বিতানের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পরে শুভেন্দু জানান, সোহিনীর সঙ্গে ফোনে তাঁর প্রায় ১০ মিনিট কথা হয়েছে। বিতানের স্ত্রী সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। যখন তিনি সোহিনীকে ফোন করেন, তখন তিনি সেনাবাহিনীর পাহারায়, তাঁর শিশু সন্তান এবং স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে শ্রীনগরের পথে ফিরছিলেন।
শুভেন্দু জানিয়েছেন, কীভাবে গোটা ঘটনাটি ঘটেছে তা তাঁকে বলেছেন সোহিনী। “কীভাবে দুই সশস্ত্র জঙ্গি তাঁদের দিকে এগিয়ে আসে এবং মুসলিম ও অ-মুসলিম পর্যটকদের আলাদা করতে বলে। মুসলিমদের ছেড়ে দেওয়া হয়, আর হিন্দু পুরুষ, নারী ও শিশুদের আলাদা করা হয়। এরপর হিন্দু পুরুষদের ‘কলমা’ পাঠ করতে বলা হয়, যা কেউই পারেননি”।
শুভেন্দুর কথায়, এই ঘটনার পরই গুলি ছোড়া শুরু করে জঙ্গিরা। স্ত্রীর চোখের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় বহু হিন্দু পুরুষকে। বিজেপি নেতার দাবি, শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ার জন্যই এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে।
এদিন রাতে পাটুলিতে বিতানের বাড়িতে বসে তাঁর মামাতো দাদা বলেন, ভাই খুব ঝামেলায় রয়েছে। গত দু’বছর ধরে ওরা একটা সমস্যা রয়েছে। সেই জন্য ওঁর স্ত্রীর মানসিক অস্থিরতা রয়েছে। বিতান বলেছিল, সোহিনীর মন যাতে ভাল হয় সেজন্যই কাশ্মীরে বেড়াতে যাওয়ার কথা ঠিক করেছে।
এহেন সোহিনীর মানসিক অবস্থা যে এখন কীরকম, তা তাঁর কথাতেও আঁচ পাওয়া যায়। বিতানের দেহ কলকাতায় আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। সোহিনী ও তাঁর শিশুপুত্রকে কীভাবে বিশেষ বিমানে কলকাতায় ফেরানো যায় তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছেন শুভেন্দু। সোহিনীকে তাঁর ব্যক্তিগত ফোন নম্বরও দিয়েছেন।
পরে বিতানের স্ত্রীকে ফোন করেন বিজেপি নেতা শঙ্কু দেব পণ্ডাও। তিনি সোহিনীকে বলেন, তাঁদের সঙ্গে কোনও স্বেচ্ছাসেবক দিলে কি ভাল হয়! ওই ফোনের রেকর্ডে শোনা যায়, সোহিনী বলেন ‘হ্যাঁ’। যদিও দ্য ওয়াল ওই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শুভেন্দু এদিন টুইট করে আরও লেখেন, “আমি কল্পনাও করতে পারছি না, কী বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে ওই মহিলা গিয়েছেন এবং এখনও যাচ্ছেন। শুধু আশা করি, তিনি এবং তাঁর মতো অন্যরাও যেন এই মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেন।”